November 27, 2024
আঞ্চলিকজাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

রাত পোহালেই খুলনার ৩২টিসহ ১৬১ ইউপিতে ভোট

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
রাত পোহালেই আগামীকাল সোমবার দেশের ছয় জেলার ২৩টি উপজেলায় ১৬১টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল ঘোষণার পর মহামারীর কারণে এতদিন আটকে ছিল প্রথম ধাপের এ ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নির্বাচন। ১৬১টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২০টি খুলনা বিভাগের। যার মধ্যে খুলনা জেলার ৩২টি। এদিন ৯টি পৌরসভাতেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় দীর্ঘদিন পর ভোটের আমেজে ‘সরগরম’ হয়ে ওঠা গ্রামে-গঞ্জে শুরু হচ্ছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এ ভোটকে ঘিরে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্যদের প্রচারণায় মুখর হয়ে ছিল পথ-ঘাট। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাওয়ার সময়ও শেষ হয়েছে শনিবার মধ্যরাতে।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে গ্রামেগঞ্জে উৎসব চলছে। প্রচারণাও শেষ। স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ ভোটের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার রয়েছে। তিনি জানান, ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে বেশ সাড়া পড়ে ভোটারদের মাঝে। প্রার্থীরাও বেশ সক্রিয়। দলীয়ভাবে ভোট হলেও তেমন কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় অতিরিক্ত বিজিবিও মোতায়েন থাকবে।
দলীয় প্রতীকের এ ভোটে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি দল অংশ নিচ্ছে। তবে বিএনপি অংশ না নিলেও অনেক এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে দলটির। গত ২১ জুন প্রথম ধাপে ২০৪টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটের দিন কেন্দ্রের বাইরে সহিংসতায় দু’জনের প্রাণহানি ঘটে। দুয়েকটি ছোটখাটো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ওই নির্বাচন ভাল হয়েছে বলেও দাবি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এবারের নির্বাচন নিয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, আমরা সব বিষয়ে সজাগ রয়েছি। এখনও পর্যন্ত কোনো ধরনের বড় অভিযোগ, গোলযোগ হয়নি। নির্বাচনী সামগ্রী নিরাপত্তার মধ্যে সব জায়গায় পাঠানো হয়েছে। ইভিএম ও ব্যালট পেপারও যথাসময়ে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে এতদিন আটকে ছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচন। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কয়েক দফায় কয়েক হাজার ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় সরকারের ভোট হবে। প্রথম ধাপে সাড়ে তিনশ’র বেশি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হওয়ার কথা ছিল গত ১১ এপ্রিল। সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে স্থগিত হয় এ নির্বাচন। পরে ২১ জুন ২০৪টি ইউনিয়নে নির্বাচন হয়েছিল। তখন বাকি ইউপির নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়। প্রায় চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদের বাকি সাধারণ নির্বাচন কয় ধাপে এবং কবে নাগাদ অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়ে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে সিদ্ধান্ত হবে।
যে ১৬১ ইউপিতে সোমবার ভোট : খুলনা বিভাগের খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও নোয়াখালীর ১৬১টি ইউনিয়ন পরিষদ এবং ৯টি পৌরসভায় ভোট হবে। ৯টি পৌরসভার সবকটিতে এবং ১৬১টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ১১টিতে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে।
খুলনা জেলার কয়রার আমাদি, বাগালী, মহেশ্বরীপুর, মহারাজপুর, কয়রা, উত্তর বেদকাশী ও দক্ষিণ বেদকাশী। দাকোপের পানখালী, দাকোপ, লাউডোব, কৈলাশগঞ্জ, সুতারখালী, কামারখোলা, তিলডাঙ্গা, বাজুয়া ও বানিশান্তা। বটিয়াঘাটার গংগারামপুর, বালিয়াডাঙ্গা ও আমিরপুর। দিঘলিয়ার গাজীরহাট, বারাকপুর, দিঘলিয়া, সেনহাটী, আড়ংঘাটা, যোগীপুল। পাইকগাছার সোলাদানা, রাড়ুলী, গড়ইখালী, চাঁদখালী, দেলুটি, লতা ও কপিলমুনি।
বাগেরহাট ফকিরহাটের বেতাগা, লখপুর, পিলজংগ, ফকিরহাট, বাহিরদিয়ামানসা, নলধা মৌভোগ ও শুভদিয়া। মোল্লাহাটের উদয়পুর, চুনখোলা, কোদালিয়া, আটজুড়ি, গাওলা ও কুলিয়া। চিতলমারীর বড়বাড়ীয়া, হিজলা, শিবপুর, চিতলমারী, চরবানিয়ারী, কলাতলা ও সন্তোষপুর। কচুয়ার গজালিয়া, ধোপাখালী, মঘিয়া, গোপালপুর, রাড়ীপাড়া ও বাধাল।
রামপালের গৌরম্ভা, বাইনতলা, হুড়কা, মল্লিকের বেড়, বাঁশতলী, উজলপুর, রামপাল, পেড়িখালী ও ভোজপাতিয়া। মোংলার চাঁদপাই, বুড়িরডাংগা, চিলা, মিঠাখালী, সোনাইলতলা ও সুন্দরবন। মোরেলগঞ্জের পঞ্চকরন, দৈবজ্ঞহাটী, চিংড়াখালী, হোগলাপাশা, বনগ্রাম, বলইবুনিয়া, হোগলাবুনিয়া, বহরবুনিয়া, নিশানবাড়ীয়া, মোরেলগঞ্জ, তেলিগাতী, পুটিখালী, রামচন্দ্রপুর, জিউধরা, বারইখালী। শরণখোলার ধানসাগর, খোন্তাকাটা, রায়েন্দা, সাউথখালী। বাগেরহাট সদরের বারুইপাড়া, বেমরতা, বিষ্ণুপুর, ডেমা, কাড়াপাড়া, খানপুর ও রাখালগাছি।
সাতক্ষীরা কলারোয়ার কয়লা, হেলাতলা, যুগীখালী, জয়নগর, জালালাবাদ, লাঙ্গলঝাড়া, কেঁড়গাছি, সোনাবাড়িয়া, চন্দনপুর ও দেয়াড়া। তালার ধানদিয়া, তেঁতুলিয়া, তালা, ইসলামকাটি, মাগুরা, খেসরা, জালালপুর, খলিলনগর, নগরঘাটা, সরুলিয়া ও খলিষখালী।
নোয়াখালী সুবর্ণচরের চরবাটা, চরক্লার্ক, চরওয়াপদা, চর আমানউল্যাহ, পূর্বচরবাটা ও মোহাম্মদপুর। হাতিয়ার মুছাপুর, চরহাজারী। হাতিয়ার চর ঈশ্বর, চরকিং, তমরদ্দি, সোনাদিয়া, বুড়িরচর, জাহাজমারা ও নিঝুমদ্বীপ। চট্টগ্রাম সন্দ্বীপের বাউরিয়া, গাছুয়া, সন্তোষপুর, আমানউল্ল্যা, হরিশপুর, রহমতপুর, আজিমপুর, মুছাপুর, মাইটভাঙ্গা, সারিকাইত, মগধরা ও হারামিয়া।
কক্সবাজার মহেশখালীর হোয়ানক, মাতারবাড়ী ও কুতুবজোম। কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইল, বড়ঘোপ, দক্ষিণধুরুং, কৈয়ারবিল, লেমশীখালী ও উত্তরধুরুং। পেকুয়ার টেটং। টেকনাফের হ্নীলা, সাবরাং, টেকনাফ ও হোয়াইক্যং।
৯ পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন : একই দিনে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, ফরিদপুরের ভাঙ্গা, কক্সবাজারের চকরিয়া ও মহেশখালী, ফেনীর সোনাগাজী, নোয়াখালীর কবিরহাট, পঞ্চগগের দেবীগঞ্জ, যশোরের নওয়াপাড়া ও চট্টগ্রামের বোয়ালখালী পৌরসভায় ভোট গ্রহণ করা হবে।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *