রাজশাহীতে নৌকাডুবির কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
রাজশাহীর পদ্মানদীতে নৌকাডুবির ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু আসলামকে এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে।
এছাড়া তদন্ত কমিটিতে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, বিআইডবিøউটি, পুলিশ নৌ-পুলিশ থেকে একজন করে প্রতিনিধি রাখা হয়েছে ওই কমিটিতে। কমিটিকে দুই কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক সাংবাদিকেদের এই তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে নিহতদের স্বজনদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আহতদের চিকিৎসার ব্যয় ভার বহন করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। তারপর কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক। এদিকে রাজশাহীর পদ্মায় নৌকাডুবির ঘটনায় আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া মৃত নারীর নাম হলো মনি বেগম (৪৫)। তিনি নিখোঁজ কনের চাচি।
এর আগে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স জানায়, পদ্মানদীতে বিয়ে বাড়ির দু’টি নৌকা ডুবে যায়। দুই নৌকায় প্রায় ৩৮ জন যাত্রী ছিল। ঘটনার পর উদ্ধার করা হয়েছে ১৪ জনকে। এর মধ্যে রামেক হাসপাতালে নেওয়ার পর মরিয়ম খাতুন নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। রাত পর্যন্ত নিখোঁজ ছিল প্রায় ২৪ জন। তবে শনিবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্নভাবে বেঁচে ফিরেছে আরও ১৭ জন। এ ঘটনায় প্রায় সাত জন নিখোঁজ রয়েছেন। তারা শুক্রবার সন্ধ্যায় বরের বাড়িতে বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান শেষে নতুন বউ নিয়ে ফিরছিলেন। ফিরোনি অনুষ্ঠানের জন্য বর-কনেসহ কনে পক্ষের লোকজন নদীর ওপারে চরখিদিরপুর থেকে ওপারে থাকা পবা উপজেলার ডাঙেরহাটে ফেরার পথে মহানগরীর রাজপাড়া থানার শ্রীরামপুর এলাকার বিপরীতে থাকা মাঝ নদীতে এ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ছয়জন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া উদ্ধারকৃতদের মধ্যে হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত শিশুর মরদেহ এখন তার মহানগরীর বসুয়ার নিজ বাসায় নেওয়া হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টার দিকে বসুয়া জামে মসজিদে তার নামাজে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এই নিয়ে নৌকাডুবিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো দু’জনে।
এছাড়া রামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল নৌকার মাঝি খাদিমুল ইসলাম (২৩), রতন আলী (২৮) ও তার স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন (২২), সুমন আলী (২৮) ও তার স্ত্রী নাসরিন বেগম (২২) এবং মেয়ে সুমনা আক্তারকে (৬)। আর রতন ও তার স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন জীবিত উদ্ধার হলেও তাদের ছয় বছরের মেয়ে মরিয়ম খাতুনকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে তাকে উদ্ধার করা হয়েছিল। আর মেয়েকে নিয়ে নদীতে সাঁতরে উঠেছিলেন সুমন-নাসরিন দম্পতি।