রাখাইনে মিয়ানমার পুলিশের সঙ্গে বৌদ্ধ বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে বিদ্রোহীদের সঙ্গে দেশটির পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইটস অব মিয়ানমার সংবাদপত্র বুধবার একথা জানিয়েছে, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। রাজ্যটির বৌদ্ধ রাখাইন নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বাড়তে থাকা লড়াইয়ের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটল।
সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীগুলোর অধিক সায়ত্বশাসনের দাবিতে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে। এদের মধ্যে আরাকান আর্মি অন্যতম। ডিসেম্বরের প্রথম দিকে তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় আড়াই হাজার লোককে বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
গ্লোবাল নিউ লাইট জানিয়েছে, মঙ্গলবার বুথিদাউং এলাকার কাছে সাইতাউং গ্রামে ‘ছোট ও ভারী অস্ত্রে’ সজ্জিত প্রায় ৩০ জনের একটি দল সীমান্তবর্তী পুলিশের ওপর হামলা চালায়, এ সময় এক পুলিশ সদস্য গুরুতরভাবে আহত হন। আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইন থু খা পুলিশের ওপর হামলার কথা অস্কবীকার করে বলেছেন, মঙ্গলবার সাইতাউংয়ে সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে।
বুধবার তিনি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাদের গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান জোরদার করার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে অনেক দূরের ওই এলাকায় কয়েকশত সীমান্তবর্তী পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আজ সকাল ৮টায় আরেকটি এলাকায় লড়াই শুরু হয়েছে, বলেছেন তিনি।
এ বিষয়ে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল তুন তুন নাই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, গত সপ্তাহে রাখাইনে লড়াইয়ের জেরে সোমবার নতুন করে দেড় হাজার লোককে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে আর এর আগে ৮ ডিসেম্বর সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে আরও এক হাজার লোককে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছিল।
দেশটির উত্তরাঞ্চল ও উত্তরপূর্বাঞ্চলের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে স্থবির হয়ে থাকা শান্তি আলোচনা শুরু করতে গত মাসে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী চার মাস লড়াই বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু পশ্চিমের রাখাইন রাজ্যকে এই সুযোগের বাইরে রাখা হয়। এতে দেশের সব সংঘাত শেষ করার ক্ষেত্রে দেশটির সামরিক বাহিনীর আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়।
২০১৭ সালে এই রাখাইনেই দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নির্মম সামরিক অভিযান চালিয়েছিল সামরিক বাহিনী। ওই অভিযানের মুখে সাত লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।