রক্ষাকর্তা যখন আমাদের সুন্দরবন
আলি আবরার
পুনরায় আরেকবার ঘূর্ণিঝড়ের বিরুদ্ধে রক্ষাকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হলো সুন্দরবন। গতকালকে সন্ধ্যা থেকে সুপার সাইক্লোন আমফান দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে তাণ্ডব চালাতে শুরু করলে তা প্রতিহত করে বাঁধার দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় ম্যানগ্রোভ বনটি যা আজকে ভোর পর্যন্ত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে একটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
সুপার সাইক্লোনটি গত কালকে সন্ধ্যায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে ঝরো বাতাস, প্রচণ্ড বৃষ্টি এবং ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস সহ প্রথম আঘাত হানে।
আবহাওয়াবিদরা জানান, অত্যন্ত মারাত্মক এই ঘূর্ণিঝড় টি বাংলাদেশের খুলনা, মোংলা, সাতক্ষীরা এবং সুন্দরবনের উপর শক্তি প্রদর্শন করা সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ কিঃমি প্রতি ঘন্টায় যা দমকা হাওয়া আকারে সর্বোচ্চ ১৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে সুন্দরবন না থাকলে আম্ফানের ধ্বংসের ক্ষতচিহ্ন আরও অনেক হতো।
বিশ্বের সব থেকে বড় ম্যানগ্রোভ বনটি উপকূলীয় অঞ্চলগুলোকে আম্ফানের হিংস্রতা থেকে রক্ষা করেছে এবং বর্তমানে সুন্দরবন অতিক্রম করে দুর্বল হয়ে একটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে যা গতকালকেও বেশ ধ্বংসাত্মক ছিল।
খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন “সুন্দরবন আম্ফানের বিশাল ক্ষতি থেকে আমাদের রক্ষা করেছে”
“সুন্দরবন আমাদেরকে বরাবরই আম্ফানের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও এর প্রভাব থেকে রক্ষা করে চলেছে”
“ঘন ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট হাওয়ায় সুন্দরবন একটি ঢাল হিসেবে কাজ করে। বাতাসের গতিকে অনেকাংশে কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি যখন ঝড় এর ভেতর থেকে যেতে থাকে তখন এই বন জলোচ্ছ্বাস এবং সমুদ্রের ঢেউ কে ধীরে ধীরে কমিয়ে ফেলে”
বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ঝড়টি প্রবাহিত হওয়ার সময় বেশ কিছু প্রাণহানি ঘটায়, গাছপালা উপড়ে ফেলে, বাড়িঘর ভেঙ্গে ফেলে, এবং অসুস্থ মানুষজনদের হাসপাতাল অন্যান্য চিকিৎসা কেন্দ্রে যেতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।
এর আগেও ২০০৭ এবং ২০০৯ সালে একই ধরনের দুটি ঝড়ে বেশ কিছু মানুষ মারা গেলেও ঢাল হিসাবে উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ ও প্রচণ্ড ঝড়ের মাঝে অবস্থান করে তাদের রক্ষা করে এই সুন্দরবন।