যোগিপোলের প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী, ছড়াচ্ছে পানিবাহিত রোগ
উঁচু বেড়িবাঁধ আর অপরিকল্পিত মৎস্য ঘের জলাবদ্ধতার কবলে
খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধি
দিঘলিয়া উপজেলার যোগিপোল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বিলডাকাতিয়া ও পার্শবর্তী এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের দাবী বিলডাকাতিয়ায় অপরিকল্পিত মৎস ঘেরের বেড়িবাঁধের কারণে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বর্ষায় জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে এ এলাকার মানুষ।
যোগিপোল ইউনিয়নের ৫, ৬ ও ৭নং ওয়ার্ডের বৃষ্টির পানি এবং বাসাবাড়ীর পানি নিষ্কাশনের একমাত্র উপায় ৭নং ওয়ার্ডের বিলডাকাতিয়ার সরকারি খাল। ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের সংযোগ ড্রেনগুলো দিয়ে পানি বিলডাকাতিয়ায় প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চলের উপর দিয়ে সরকারি খালে চলে যায়। কিন্তু বিলডাকাতিয়ার মাছের ঘেরের মালিকরা পানি নিস্কাশনের কোন ব্যবস্থা না রেখে ইচ্ছামত অপরিকল্পিত ঘেরের বেড়িবাঁধ উঁচু করে নির্মাণ করায় ৭নং ওয়ার্ডের বিলডাকাতিয়া ও তার পার্শবর্তী এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবার স্থায়ী পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ সকল এলাকার কাচা-পাকা রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে বসবাসের ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের যোগিপোল এলাকার বিলডাকাতিয়ার বসতি, পাার্শবর্তী মোড়ল পাড়া, কেবল পাড়াসহ পার্শবর্তী এলাকার কাঁচা-পাকা রাস্তা পানিতে তলিয়ে বসতবাড়ীতে পানি প্রবেশ করেছে। স্থানীয় হাবিবুর রহমান পুলিশ, বিল্লাল পুলিশ, মীরেরডাঙ্গা আলীম মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা শামছুর রহমান, মো. কবির হোসেন, মো. রবিউল ইসলামসহ অনেকের ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে এবং এ এলাকার বহু পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মীরেরডাঙ্গা আলীম মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা শামছুর রহমান বলেন, ৭নং ওয়ার্ডের বিলডাকাতিয়ার নিম্ন এলাকায় স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে এখানকার কাঁচা-পাকা রাস্তাগুলো তলিয়ে থাকায় হুমকির মুখে রয়েছে। পানিবন্দী মানুষের মাঝে চর্মরোগসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলে এ এলাকা ৪/৫দিন এবং ভারী বর্ষণ হলে দীর্ঘস্থায়ী পানিবন্দী হয়ে পড়ে এখানকার মানুষ।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বর শেখ আমজাদ হোসেন বলেন, বিলডাকাতিয়ার মাছের ঘের মালিকরা অপরিকল্পিতভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করায় এ অঞ্চলের পানি বিলডাকাতিয়ার সরকারি খালে যেতে না পারায় মারাক্তক জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। ঘের মালিকরা রাস্তা দখল করে উঁচু বেড়িবাঁধ নির্মাণ করায় জলাবদ্ধতার শিকার এখানকার প্রায় শতাধিক পরিবার। তিনি বলেন, পানিবন্দী মানুষের পাশে দাড়িয়ে লোকজন নিয়ে পানি নিষ্কাশনের জন্যে ঘেরের বেঁড়িতে আরসিসি পাইপ দিতে গেলে ঘের মালিকদের বাধার মুখে পড়ি। সংঘর্ষ এড়াতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করেই ফিরে আসতে হয়েছে।
পানিবন্ধী মানুষগুলো বিষাক্ত সাপ আর পোকা-মাকড়ের ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী পানিবন্দী মানুষগুলোকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে দিঘলিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়