যুদ্ধাপরাধ: রণদা প্রসাদের হত্যাকারীর প্রাণদণ্ড
মুক্তিযুদ্ধের সময় দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা, তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহাকে হত্যাসহ গণহত্যার তিন ঘটনায় টাঙ্গাইলের মাহবুবুর রহমানের ফাঁসির রায় দিয়েছে যুদ্ধাপরাধ আদালত।
বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার আসামির উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করে।
৭০ বছর বয়সী আসামি মাহবুবুর একাত্তরে মির্জাপুর শান্তি কমিটির সভাপতি বৈরাটিয়া পাড়ার আব্দুল ওয়াদুদের ছেলে। মাহবুবুর ও তার ভাই আব্দুল মান্নান সে সময় রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়ে যেসব মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান, তা উঠে এসেছে এ মামলার বিচারে।
২৩৫ পৃষ্ঠার রায় ট্রাইব্যুনাল বলেছে, আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা তিনটি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন, হত্যা- গণহত্যার তিন অভিযোগেই মাহবুবুরকে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছে আদালত। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে বলা হয়েছে রায়ে।
রণদা প্রসাদ সাহার পুত্রবধূ স্ত্রী স্মৃতি সাহা ও নাতি রাজীব সাহাসহ কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের বেশ কয়েকজন রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
একাত্তরে বাবা আর দাদাকে হারানো রাজীব এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আমাদের পরিবারের ওপর এটা একটা বোঝা হয়ে ছিল। আজ আমরা বিচার পেলাম।”
রণদা প্রসাদ সাহার পুত্রবধূ বলেন, “অত্যাচারের বিচার পেয়েছি, স্বাধীনতার এত বছর পর হলেও উত্তর পেয়েছে আগামী প্রজন্ম। বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা লজ্জাজনক, মর্মান্তিক। আরপি সাহার মতে মহান একজন ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। এবং সবার কাছে আশির্বাদ চাই।
অন্যদিকে আসামির আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম বলেন, এই রায়ে তারা সংক্ষুব্ধ, তারা আপিল করবেন।
নিয়ম অনুযায়ী, রায়ের এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ পাবেন আসামি মাহবুবুর রহমান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত রায় আসা ৩৮টি মামলার ৯৬ আসামির মধ্যে ছয়জন বিচারাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মোট ৮৮ জনের সাজা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬১ যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ সাজার রায় এসেছে।