যুদ্ধরত সেনাদের মায়েদের সঙ্গে পুতিনের বৈঠক
ইউক্রেনে কথিত বিশেষ সামরিক অভিযানে যুদ্ধরত কিছু সেনার মায়েদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এ বৈঠকের কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, শুক্রবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে কয়েকজন নিহত সেনার মায়েরাও উপস্থিত ছিলেন। তাদের পুতিন সান্ত্বনা দিয়ে বলেছেন, ‘ছেলে হারানোর শূন্যতা কোনো কিছুতে পূরণ সম্ভব না। বিশেষ করে একজন মায়ের জন্য এটি কষ্টের।’
তবে যেসব মায়েরা পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তাদের যাচাই-বাঁছাই করে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমালোচনাকারীরা। তাদের দাবি, যুদ্ধের পক্ষে কথা বলেছেন শুধুমাত্র সেসব মায়েদের পুতিনের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায় ১৭ জন মায়ের সঙ্গে বড় একটি টেবিলে বসে আছেন পুতিন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাথায় কালো রঙের স্কার্ফ পরে এসেছিলেন— যা শোক প্রকাশের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
পুতিন তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি আপনাদের ব্যক্তিগতভাবে জানাতে চাই, এবং এ দেশের সব নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে জানাতে চাই, আমরাও এ কষ্ট অনুভব করি।’
একজন মাকে পুতিন বলেন, তার ছেলে ‘আরোপিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছিল’ এবং ‘তার মৃত্যু বৃথা যায়নি।’
এছাড়া পুতিন ওই মায়েদের জানিয়েছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের ছেলেরা কেমন আছে সেটি সরাসরি জানতে তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছিলেন তিনি। পুতিন আরও জানিয়েছেন, তিনি সেনাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে খোঁজ খবর রাখছেন।
যুদ্ধক্ষেত্রে কি ঘটছে এ নিয়ে অনেক সংবাদমাধ্যমে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন পুতিন। এসব তথ্য বিশ্বাস না করতে মায়েদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে একাধিকবার খবর বের হয়েছে, অনেক রুশ সৈন্যর মায়েরা প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছেন, তাদের ছেলেদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র ছাড়াই যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি তীব্র শীতের মধ্যে টিকে থাকার পোশাকও তাদের দেওয়া হয়নি।
দুই সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ জেনারেল মার্ক মিলে জানিয়েছিলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১ লাখ রুশ সেনা ও ১ লাখ ইউক্রেনীয় সেনা আহত বা নিহত হয়েছেন।
সমালোচনাকারীরা বলছেন, পুতিনের এ বৈঠকটি সাজানো। তিনি সাধারণ রাশিয়ানদের দেখাতে চেয়েছেন, যুদ্ধে পাঠানো সেনা ও তাদের পরিবারের খোঁজ খবর রাখছেন তিনি। কিন্তু যুদ্ধের শুরুটা আসলে তিনিই করেছিলেন।