যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরায়েল
চলমান চারদিনের যুদ্ধবিরতির মধ্যেই অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে ৬ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
শনিবার জেনিন শহরে অনুপ্রবেশের সময় ইসরায়েলি গুলিতে চার ফিলিস্তিনি নিহত হন। এইদিনে ভোরে জেনিনের নিকটবর্তী একটি বাড়ি ঘেরাও করে শক্তিশালী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে ইসরায়েলি বাহিনী। এসময় নিজ বাড়ির বাইরে ২৫ বছর বয়সী এক চিকিৎসক এবং রামাল্লার কাছে এল-বিরেহ এলাকায় আরেক ফিলিস্তিনি নিহত হন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, শহরে প্রবেশরত সামরিক যানবাহনের উপর দিয়ে হেলিকপ্টার উড়ছে।
৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে হামাসের হামলার পর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানে বেড়েছে। হামাসের হামলার পর থেকে পশ্চিম তীরে ৫২ শিশুসহ অন্তত ২২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
এদিকে যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী শনিবার (২৫ নভেম্বর) রাত স্থানীয় সময় ১টার দিকে কারাগারে বন্দি আরও ৩৯ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসরাইলি কারাগার কর্তৃপক্ষ।
এর প্রায় দুই ঘণ্টা আগে ১৩ ইসরাইলি নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর পাশাপাশি চার বিদেশি নাগরিককেও মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটি।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকালে চার দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। কাতারের মধ্যস্থতায় হওয়া এই যুদ্ধবিরতির মধ্যদিয়ে গাজায় ইসরাইলের বোমাবর্ষণ বন্ধ হয়ে যায়।
যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী প্রথমদিন স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় ১৩ জন ইসরাইলি ও ১২ জন থাই নাগরিককে মুক্তি দেয় হামাস। এর আড়াই ঘণ্টা পর কারাগার থেকে ৩৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয় ইসরাইল।
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের গত ৭ অক্টোবরের আকস্মিক হামলায় ১৪০০ জন নিহত হয়েছে বলে জানায় ইসরায়েল। তবে সম্প্রতি সেই সংখ্যা কমিয়ে ১২০০ করা হয়েছে। এছাড়া হামাস ইসরায়েল থেকে ২৪০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে গেছে বলে জানায় নেতানিয়াহু প্রশাসন।
এরপর থেকে গাজায় ও পশ্চিম তীরে নির্বিচারে হামলা করছে ইসরায়েল। গাজার আবাসিক এলাকা, স্কুল, হাসপাতাল, জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার গুদাম, খাবারের দোকানসহ কোনো কিছুই হামলা থেকে বাদ যায়নি। এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ও গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সাড়ে ১৪ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৬০০টিরও বেশি শিশু। নিহত বাকিদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী।