যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে এখন ‘শীর্ষ ধনী’ দেশ চীন
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সারা বিশ্বে বড় পরিবর্তন এসেছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে। করোনার হানায় অস্বস্তিতে পড়েছে তথাকথিত বিত্তশালী দেশগুলোও। গত দু’বছরে বেকারত্ব যেমন বেড়েছে, তেমনি স্বাস্থ্যসহ জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ বাড়াতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তবে করোনাকালীন সংকটের কথা বাদ দিলে গত দুই দশকে বিশ্বের অর্থসম্পদ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। আর সেই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে পৃথিবীর শীর্ষ ধনী দেশ এখন চীন।
বিশ্ব অর্থনীতির ৬০ শতাংশের বেশি দখলে রাখা শীর্ষ ১০ ধনী দেশের আয়-ব্যয় তথা সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে সম্প্রতি সমীক্ষা চালিয়েছিল আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ম্যাকিনসে অ্যান্ড কোম্পানি। গত সোমবার (১৫ নভেম্বর) প্রকাশ করা হয়েছে সেই সমীক্ষার ফল।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ২০০০ সালে বৈশ্বিক ধনসম্পদের পরিমাণ ছিল যেখানে ১৫৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, দুই দশক পরে তার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১৪ ট্রিলিয়ন ডলারে। এই সময়ে অর্থনৈতিক শক্তি সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চীনের। গত ২০ বছরে গোটা বিশ্বে যে পরিমাণ সম্পদ বেড়েছে, তার এক-তৃতীয়াংশই চীনাদের অবদান।
সমীক্ষা অনুসারে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগ দেওয়ার আগে ২০০০ সালে চীনের সম্পদ ছিল মাত্র সাত ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২০ ট্রিলিয়ন ডলারে।
তবে একাধিক নতুন নীতির কারণে প্রতিযোগিতায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত দুই দশকে মার্কিনিদের সম্পদ দ্বিগুণের বেশি বাড়লেও চীনের তুলনায় তা বেশ কম। ২০২০ সালে তাদের অর্থসম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯০ ট্রিলিয়ন ডলার।
তবে বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির দেশেই একটি জায়গায় অভাবনীয় মিল। উভয় দেশেই দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সম্পদ রয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ ধনী পরিবারের হাতে এবং তাদের অংশ ক্রমেই বাড়ছে।
ম্যাকিনসে অ্যান্ড কোম্পানির প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্ব অর্থনীতিতে ছড়ি ঘোরাচ্ছে মূলত রিয়েল এস্টেট বা আবাসন বাণিজ্য। এর প্রভাব পড়ছে গোটা পৃথিবীতে। চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মতো শীর্ষ অর্থনীতির দেশেও মধ্যবিত্তের সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে বাড়ি বা জমির দাম। ফলে সেখানে গৃহহীনের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।