যার যার এলাকা সুরক্ষিত করুন, কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা
নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে এক এলাকার মানুষ যেন অন্য এলাকায় ঢুকতে না পারে তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবন থেকে রোববার সকালে ভিডিও কনফারেন্সে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে বরিশাল ও খুলনা জেলার কর্মকর্তাদের তিনি এই নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “প্রত্যেকে যার যার এলাকা সুরক্ষিত করেন। হঠাৎ করে বাইরে থেকে কাউকে যেতে দেবেন না। কারণ আমরা দেখতে পাচ্ছি অনেক জায়গায় এই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে কারা..বাইরে থেকে যারা আসছে…সেখানে মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে। এজন্য অন্তত এই কয়েকটা দিন আপনারা আপনার নিজের এলাকাকে সুরক্ষিত করেন।
“কেউ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় অকারণে ছুটোছুটি করবেন না।কেউ শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যাবেন, পরে গেলেও পারেন। কেউ বাড়িতে যাবেন, পরে গেলেও পারেন।এগুলো অন্তত বন্ধ রাখেন এখন আপাতত। বন্ধ রেখে অন্তত আমরা এই অবস্থা থেকে কিন্তু উত্তরণ ঘটাতে পারি। সেজন্য সহযোগিতা করেন।”
দেশবাসীকে আশ্বস্ত করার পাশাপাশি সরকার প্রধান করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিষয়ক নির্দেশনাগুলো মেনে চলারও আহ্বান জানান।
“দুর্যোগ, কিন্তু সেই দুর্যোগটা সাহসের সাথে মোকবেলা করতে হয়। আপনারা সবাই নিজেরা সুরক্ষিত থাকেন, সুস্থ থাকেন, ভালো থাকেন সেভাবে নিজেরা নিজেদের সুরক্ষিত করেন।যেই নির্দেশনাগুলো আমরা দিয়েছি বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেওয়া হচ্ছে বা প্রতিনিয়ত রেডিও, টেলিভিশন বা সোশাল মিডিয়াতে দেয়া হচ্ছে, দয়া করে সেগুলো একটু মেনে চলুন।
“এটা মেনে চললে নিজেও ভালো থাকবেন, অপরকে আপনি সুরক্ষিত করবেন। আপনার নিজের দায়িত্ব নিজের উপর যেমন আছে আবার অন্যের জন্যও সেই দায়িত্ব আছে। সেই কথাটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।”
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “কোভিড রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত যে পিপিই, মাস্ক বা যে সমস্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয় সেগুলো জীবাণুমুক্ত রাখা এবং এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে, যেন এটা থেকে কোনো রকমে এই রোগের প্রাদুর্ভাব না ছড়াতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।”
কর্মকর্তাদের মুখে মাস্ক ব্যবহারের বিষয়টি আবারও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
“কারণ এটা ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে। কাজেই আপনারা যখনই কর্মস্থলে যাবেন বা কাজ করবেন, যেটুকুই করবেন মাস্কটার যদি ব্যবহার থাকে তাহলে আপনি নিজেকে অনেকটা সুরক্ষিত করতে পারবেন। আর অযথা হাত না ধুয়ে চোখে-মুখে দেবেন না। হাঁচি-কাশি আসলে কাপড়, রুমাল, টিস্যু ব্যবহার করেন অথবা আপনি কনুই দিয়ে হাঁচি-কাশি দেন।
মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিতে হাট-বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ না রেখে কোনো বড় জায়গা নির্দিষ্ট করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “কোনো বড় মাঠ দেখে সুনির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করে দূরত্ব বজায় রেখে রেখে হাটে পণ্য বিক্রি করার একটা ব্যবস্থা…সপ্তাহে একদিন অন্তত…সবাই সেখান থেকে কিনে নিয়ে চলে যাবে, অনেক মানুষের ভিড় যেন না হয়।
“আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা আছে, আমাদের যারা প্রশাসনের সঙ্গে আছেন তারা এবং স্বাস্থ্যকর্মী আছেন, সকলে মিলে যদি একটা প্ল্যান আপনারা করেন তাহলে কিন্তু মানুষের অন্তত স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পরিচালনা করা সহজ হবে। সেই ব্যবস্থাটা আপনারা নিতে পারেন।”
জনসমাগম করে ঘরের বাইরে নববর্ষের কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না বলেও কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেন তিনি।
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “নিজেদের পরিবার নিয়ে উৎসব করেন, কিন্তু কোনোমতেই কোনো রকম লোক সমাগম করবেন না। কারণ লোক সমাগমের কারণেই কিন্তু সংক্রমিত হচ্ছে।