September 20, 2024
আন্তর্জাতিক

ম্যাক্রোঁর কাছে ইনিয়ে-বিনিয়ে ‘ভুল’ স্বীকার করলেন বাইডেন

ফ্রান্সকে না জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সাবমেরিন চুক্তি করে ফরাসিদের ব্যাপক তোপের মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে ফাটল স্পষ্ট। তবে পুরোনো মিত্রকে শান্ত করতে চেষ্টার কমতি রাখছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফরাসি প্রেসিডেন্টের কাছে একাধিকবার ফোন করেছেন, এবার সরাসরি দেখাও করলেন। বিরোধ শুরুর পর প্রথম সাক্ষাতেই বাইডেন জানালেন, ফ্রান্সকে বাদ দিয়ে চুক্তি করা মোটেও ঠিক হয়নি। তারা এ ব্যাপারে একেবারেই আনাড়ির মতো কাজ করেছেন।

জি২০ সম্মেলনে যোগ দিতে সম্প্রতি রোমে পৌঁছেছেন জো বাইডেন। এর ফাঁকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তিনি। ভ্যাটিকানে ফরাসি দূতাবাস ভিলা বোনাপার্টে অনুষ্ঠিত হয় তাদের এ বৈঠক। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে প্রথমে কথা বলেন ম্যাক্রোঁ।

তিনি জানান, নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে থাকা দুই দেশের জন্যই এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে আগামী দিনগুলোতে সম্মিলিতভাবে আমরা কী করবো, সেটিই সবচেয়ে বড় বিষয়।

গত সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিন তৈরি করে দিতে তাদের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এতেই ক্ষেপে যায় ফ্রান্স। কারণ, এর আগে ফ্রান্সের সঙ্গে প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলারের সাবমেরিন চুক্তি করেছিল অস্ট্রেলিয়া, কিন্তু নতুন চুক্তির কারণে সেই চুক্তিটি বাতিল করে দিয়েছে অজিরা। বিপুল অংকের এই আর্থিক ক্ষতি ফরাসিরা সহজে মানবে না, তা অবশ্যই অনুমেয়। এ নিয়ে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে সাময়িকভাবে ফিরিয়ে নিয়েছিল প্যারিস।

চুক্তি ত্রিপক্ষীয় হলেও এর জন্য পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রকেই দায়ী করছে ফ্রান্স। ফরাসিদের অভিযোগ, এর মাধ্যমে বাইডেন প্রশাসন তাদের সঙ্গে বেইমানি করেছে। এরপরেই পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত উদ্যোগ নেন জো বাইডেন।

শুক্রবারের সাক্ষাতে ফরাসি প্রেসিডেন্টের কাছে সরাসরি হয়তো ক্ষমা চাননি বাইডেন, তবে ইনিয়ে-বিনিয়ে নিজেদের ভুল স্বীকার করে ঠিকই মার্কিনিদের সবচেয়ে পুরোনো মিত্রকে শান্ত করতে চেয়েছেন তিনি।

বাইডেন সাংবাদিকদের সামনে বলেন, আমার মনে হয়, যা হয়েছে সেটিকে বলা যায়, আমরা আনাড়ি কাজ করেছি। দক্ষতার সঙ্গে কিছু হয়নি।

চুক্তির সময় নিজের অবস্থান সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমার মনে হচ্ছিল কিছু হয়েছে, যা আসলে হয়নি। আর আমি পরিষ্কার বলতে চাই- ফ্রান্স আমাদের খুব, খুব মূল্যবান অংশীদার। সে নিজেই একটি শক্তি।

বাইডেন আরও বলেন, আমার ধারণা ছিল, ফ্রান্সকে এ বিষয়ে অনেক আগেই জানানো হয়েছে। ঈশ্বরের নামে বলছি, আমি জানতাম না আপনাকে (ম্যাক্রোঁ) জানানো হয়নি।

এদিন জনসম্মুখে বাইডেন যে কথা বলেছেন, ধারণা করা হয়, তিনি ভেতরে বৈঠকের সময়ও একই কথা বলেছেন। তবে তাতে ফরাসি প্রেসিডেন্টের ক্ষোভ যে পুরোপুরি যায়নি, তা তার কথাতেই স্পষ্ট।

ম্যাক্রোঁ বলেছেন, বিশ্বাস হচ্ছে ভালোবাসার মতো: মুখে বলা ভালো, কিন্তু প্রমাণ দেওয়া উত্তম।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *