মোংলার জাহাজে দুই নাবিকের ‘জ্বর সেরে গেছে’
তবে ওই তিন নাবিককে এখনও আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। আর মেডিকেল টিম এখনও ছাড়পত্র না দেওয়ায় ‘সেরেনিটাস এন’ নামের ওই জাহাজ থেকে কয়লা খালাসের কাজ এখনও শুরু করা যায়নি বলে মোংলা বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার ফখর উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন।
মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী ‘সেরেনিটাস এন’ ২৪ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে বুধবার রাতে মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়া এলাকায় পৌঁছায়। নিয়ম মাফিক বন্দরের পাঁচ সদস্যের মেডিকেল টিম বৃহস্পতিবার সকালে ওই জাহাজে গিয়ে ২০ জন নাবিকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।
তাদের মধ্যে ফিলিপিন্সের তিন নাগরিকের শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা পাওয়া গেলে তাদের নামিয়ে এনে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়।
বন্দর হাসপাতালের চিকিৎসক সামির আসিফ বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, তাপমাত্রা বেশি থাকলেও ওই তিন নাবিকের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের অন্য কোনো উপসর্গ মেডিকেল টিম পায়নি। শুক্রবার ঢাকায় আইইডিসিআরের ব্রিফিংয়েও একই কথা বলা হয়।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, “দুজনের জ্বর ভালো হয়ে গেছে, একজনের এখনও জ্বর আছে। তাদের তিনজনকে আলাদা করে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।”
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, এই নাবিকরা ১৪ ফেব্রুয়ারি ইন্দোনেশিয়া থেকে রওনা হয়েছিলেন। ২১ ফেব্রুয়ারি তারা সিঙ্গাপুরের জলসীমায় আসেন। কিন্তু সেখান থেকে কেউ ওঠানামা করেননি। সেখান থেকে তারা বাংলাদেশে এসেছেন।
“এই ভাইরাসের ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১৪ দিন। উপসর্গ দেখা দিতে ১৪ দিন লাগে। যেহেতু সেই সময়টা পার হয়ে যাওয়ার পর জ্বর হয়েছে, ফলে সেটা করোনাভাইরাসের উপসর্গ হওয়ার কথা না।”
সতর্কতা হিসেবে ওই তিনজনকে আইসোলেশনে রাখা হলেও শঙ্কামুক্ত মনে হওয়ায় পরীক্ষার জন্য তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি বলে জানান অধ্যাপক ফ্লোরা।
তিনি বলেন, “তাদের আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। যে একজনের জ্বর আছে সেটা যদি না কমে অথবা তাদের মধ্যে যদি আরও কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা যায় তাহলে আমরা তাদের নমুনা পরীক্ষা করব। অথবা সেখান থেকে শিফট করে হাসপাতালে নিয়ে আসব।”
মোংলা বন্দরের হারবার মাস্টার ফখর উদ্দিন শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এখনও মেডিকেল টিমের ছাড়পত্র পাইনি। ছাড়পত্র পেলে ওই জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ শুরু হবে।”
চীনে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর দেশের অন্য সব বিমান, স্থল ও সমুদ্রবন্দরের মত মোংলাতেও বাড়তি সতর্কতার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বন্দরে আসা সকল জাহাজের নাবিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দরে কোনো জাহাজ ভিড়লে প্রথমেই ওই জাহাজের নাবিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে মেডিকেল টিম। তারা ছাড়পত্র দিলে তবেই জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ শুরু হয়।
ঢাকায় আইইডিসিআরের ব্রিফিংয়ে বলা হয়, এখন পর্যন্ত দেশে ১০৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে কারও শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। বিদেশ থেকে আসা অতিথিদের তথ্য দিতে ঢাকার হোটেলগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো হোটেল তথ্য দেয়নি।