November 23, 2024
খেলাধুলা

মেসিকে অনুশীলনে স্বাগত জানালেও ‘হুমকি’ দিয়ে রাখলেন কোচ

কি এক অস্বস্তি! যে ক্লাবে থাকবেন না সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সেই ক্লাবেই আরও একটি বছর কাটাতে হবে লিওনেল মেসিকে। রিলিজ ক্লজ জটিলতায় যে বার্সেলোনা ছাড়া হলো না আর্জেন্টাইন খুদেরাজের।

আর থাকতেই যখন হবে, পেছনের কথা ভেবে লাভ কী! মেসি তাই সোমবার থেকে বার্সার অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন। কথা হয়েছে নতুন কোচ রোনাল্ড কোম্যানের সঙ্গেও।

মেসি যে শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনায় থেকে গেছেন তাতে খুশি কোম্যান। কিন্তু বার্সা কোচ একদম খুশিতে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছেন না। বরং ছয়বারের ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকাকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, দলের জন্য উজাড় করে দিতে প্রস্তুত খেলোয়াড়দেরই কেবল রাখবেন তিনি।

স্প্যানিশ সংবাদপত্র ‘মুন্দো দিপোর্তিভো’র প্রতিবেদনে এসেছে, মেসিকে পেয়ে যে খুশি হয়েছেন সেটি জানিয়ে দিতে কার্পন্য করেননি কোম্যান। সেইসঙ্গে কৌশলে যোগ করে দিয়েছেন, ক্লাবে শুধু প্রতিজ্ঞাবদ্ধ খেলোয়াড়দেরই দরকার।

কোম্যানের এমন কথায় মেসি রাগ করেননি। বরং তিনি নতুন ম্যানেজারকে জানিয়েছেন, এই মৌসুমে নিজের সবটুকু ঢেলে দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবেন। সব ভুলে দলের কথাই ভাববেন।

অথচ গত সপ্তাহেই মেসি জানিয়েছিলেন, বার্সেলোনায় তার আর থাকার ইচ্ছে নেই। ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিতে তার বাবা ও এজেন্ট হোর্হে মেসির দৌড়ঝাঁপে বলতে গেলে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল, নতুন ক্লাবের জার্সি গায়ে চড়াতে যাচ্ছেন আর্জেন্টাইন জাদুকর।

কিন্তু বার্সেলোনা তাকে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ক্লজের বোঝা চাপিয়ে দেয়। মেসি ক্লাব ছাড়লে সেটা জুনের মধ্যেই জানানোর কথা ছিল, যুক্তি টানে তারা। অথচ করোনার কারণে এবার লিগই শেষ হয়েছে আগস্টে, আর আগস্টেই বার্সা অধিনায়ক ক্লাব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

মেসির দাবি, তিনি আরও আগে থেকেই সেটা বহুবার বলেছেন ক্লাবকে। বর্তমান বিশ্বের সেরা এই ফুটবলার গত সপ্তাহে বলেন, ‘আমি ক্লাবকে বলেছি, প্রেসিডেন্টকেও জানিয়েছে যে আমি চলে যেতে চাই। আমি তাদের এ কথা পুরো বছরজুড়েই বলেছি। আমি মনে করি, সরে যাওয়ার সময় হয়েছে।’

আর্জেন্টাইন জাদুকর যোগ করেন, ‘আমার মনে হয়, এই ক্লাবে আরও তরুণ খেলোয়াড় প্রয়োজন, দরকার নতুন খেলোয়াড়। আমার বোধ হয় বার্সেলোনায় সময় শেষ হয়ে গেছে। আমি খুব দুঃখিত কারণ সবসময়ই বলেছি এখানে থেকে ক্যারিয়ার শেষ করতে চাই।’

চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর নয়, আরও আগেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন-জানান মেসি। কিন্তু বার্সা প্রেসিডেন্ট তার কথা কানে তুলেননি, করেছেন বিশ্বাসঘাতকতা।

মেসি বলেন, ‘আমি বার্সা প্রেসিডেন্টকে বলেছি এবং প্রেসিডেন্ট সবসময়ই বলেছেন মৌসুম শেষ হলে আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারব। আমি থাকব কি চলে যাব, সেটা আমি জানাতে পারব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তার কথা রাখেননি।’

মেসির এমন আক্ষেপভরা কন্ঠই বুঝিয়ে দিচ্ছে, জোর করে বার্সা তাকে আটকে রেখেছে। কিন্তু এখন যখন রয়েই গেছেন, ক্লাবকে সেরাটাই দিতে চান। পেশাদারিত্বের জায়গায় আবেগকে টানতে রাজি নন মেসি, এমনি এমনিই তো আর বিশ্বসেরা ফুটবলার হননি!

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *