মুসলিম দেশগুলোর বিভেদে সুযোগ নিচ্ছে তৃতীয় পক্ষ : প্রধানমন্ত্রী
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ-সংঘাতে থার্ড পার্টি (তৃতীয় পক্ষ) সুযোগ নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার ঢাকা সফররত ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিম উম্মাহর ঐক্য দরকার। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ-সংঘাত চলছে, এ সুযোগে থার্ড কান্ট্রি বা থার্ড পার্টি লাভবান হচ্ছে। মুসলমানরা নিজেদের মধ্য রক্ত ঝরাচ্ছে আর অন্যরা এ থেকে সুবিধা ভোগ করছে।
মুসলমানদের মধ্যে সমস্যা ও সংঘাত নিজেরাই দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের ওপর জোর দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এর জন্য কোনো রক্তপাতের প্রয়োজন নেই।
মুসলমানদের নিজেদের মধ্যে সংঘাত বন্ধে ওআইসিকে (অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন) ভূমিকা রাখার আহŸান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলমানদের মধ্যে সংঘাত বন্ধে ওআইসির এগিয়ে আসা উচিত। এ সময় বাংলাদেশে ধর্মীয় স¤প্রীতির কথা উলেখ করেন শেখ হাসিনা।
জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা প্রায় ১ লাখ সন্তান জন্ম দিয়েছে বলে জানান তিনি। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণই তার লক্ষ্য বলেও জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
ইরানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে আমাদের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক। বাংলা ভাষায় অনেক ফারসি শব্দ থাকার কথাও উলেখ করেন শেখ হাসিনা।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ। দুই দেশের মধ্যকার সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইরান-বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ আরোপের পর দেশটির বর্তমান অবস্থার কথা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। ইরান সৌদি আরবসহ সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ঐক্য চাই। সৌদি আরবসহ সব প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাই। কোনো বৈরিতা চাই না। ওআইসিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার প্রশংসা করেন ইরানি মন্ত্রী।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতির প্রশংসা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এসব হয়েছে। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতি দৃষ্টান্তমূলক। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ইরান সেমিনার করবে বলেও জানান তিনি। এছাড়া, ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন জাভেদ জারিফ। ইরানি প্রতিনিধিদলে আরো ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেজা নাফার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।