মুজিববর্ষ: স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় আসছেন না বিদেশি অতিথিরা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
মুজিববর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ‘স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে’ বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানসহ গুরুত্বর্পূণ ব্যক্তিরা আসছেন না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী সোমবার একথা জানান।
বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসের রোগী ধরা পড়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আগামী ১৭ মার্চ অনুষ্ঠেয় মুজিববর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠান কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত হয়। গতকাল সোমবার বিকালে জাতীয় কমিটির এক সভা শেষে কামাল চৌধুরী সাংবাদিকদের বিদেশি অতিথিরা আসছেন না বলে জানান।
মুজিববর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসার কথা ঠিক ছিল। ভারতের নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জি নিয়ে সহিংসতায় মোদীকে ঠেকানোর কর্মসূচি দিয়েছিল বিভিন্ন সংগঠন।
কামাল চৌধুরী বলেন, এসব বিষয় এখানে মোটেই সম্পৃক্ত নয়। মুজিববর্ষে স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করেই আসছেন না বিদেশি অতিথিরা। মুজিববর্ষে বিদেশি অতিথিদের আগমনের বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান কামাল চৌধুরী।
বিশ্বের শতাধিক দেশে নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে লক্ষাধিক মানুষকে আক্রান্ত এবং সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটনার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা কর্মসূচি স্থগিত হচ্ছে। ঢাকায় ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে মুজিববর্ষের জমকালো উদ্বোধন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও তা সেভাবে হচ্ছে না। সীমিত পরিসরে হবে সেই অনুষ্ঠান। নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে জনসমাগমের মতো অনুষ্ঠান এড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
কামাল চৌধুরী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছেন, যে কোনো অনুষ্ঠানেই জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। প্যারেড স্কয়ারের অনুষ্ঠানসূচি নিয়েও সোমবারের সভায় আলোচনা করেন বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির সদস্যরা।
বাস্তবায়ন কমিটির অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এই সভায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ছিলেন।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, চিত্রনায়ক এম এ আলমগীর, সঙ্গীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাও সভায় অংশ নেন।
কামাল চৌধুরী জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটির প্রধান শেখ হাসিনাকে দেখিয়ে এই সূচি চূড়ান্ত করা হবে। তিনি জানান, ১৭ মার্চের উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি স্যাটেলাইট চ্যানেল ও সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে প্রচারের জন্য একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে।
১৭ মার্চ যারা যারা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে কর্মসূচি পালন করবেন, তারাও যেন জনসমাগম কমিয়ে তা করেন, সেই অনুরোধ রেখেছেন কামাল চৌধুরী। তিনি বলেন, শুধু আয়োজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, মুজিববর্ষে সেবা ও উন্নয়ন খাতকে প্রাধান্য দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন। ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবসের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ও টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের অনুষ্ঠানটি যথারীতি আয়োজিত হবে।