December 21, 2024
আঞ্চলিক

মুজিববর্ষ উপলক্ষে খুবিতে নবনির্মিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল দর্শনীয় হয়ে উঠেছে

 

প্রতিদিন আসছে শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার মানুষ

. প্রতিবেদক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীমুজিববর্ষউপলক্ষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি এখন শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার মানুষের জন্য দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। ম্যুরালটি এতদাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষাসফরে আসা শিক্ষার্থী, শিক্ষক বা পর্যটনসহ অন্যান্য কাজে আসা মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই তা দেখতে আসছেন নানা বয়সের মানুষ। অনেকেই আসছেন সপরিবারে। ম্যুরালটি নির্মাণের উদ্যোগ তার নির্মাণশৈলীর প্রশংসা করছেন দর্শকরা। সেলফি না তুলে কেউ ফিরছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের পাশেই নির্মিত হওয়ায় তা খুলনাসাতক্ষীরা মহাসড়কে যাতায়াতকারীদের দৃষ্টি কাড়ছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর এই ম্যুরালটি মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে প্রথম নির্মিত হয়েছে।

গত বছর ২২ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আনুষ্ঠানিকভাবে এই ম্যুরালটির উদ্বোধন করেন। বেদিসহ ৩৮ ফুট উঁচু ৪৩ ফুট বিস্তৃতকালজয়ী মুজিবনামাঙ্কিত এই শিল্পকর্মটিতে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর একটি প্রতিকৃতি, বিভিন্ন আকৃতির ৮টি স্তম্ভ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণউৎকীর্ণ একটি প্লেট এবং শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য একটি মঞ্চ। মাঝখানে একই আকারের ৬টি স্তম্ভ রয়েছে। ৬টি স্তম্ভ বাঙালি জাতির মুক্তিসনদ দফার প্রতীক। কালো রংয়ের স্তম্ভটি শোকাবহ ১৫ আগস্টের স্মারক। স্তম্ভের শীর্ষে উৎকীর্ণ শিল্পকর্মটির নাম আর নিচের অংশে রয়েছে উদ্বোধন ফলক। লাল আভার স্তম্ভটি লম্বভাবে উপরে উঠে অনুভূমিকভাবে সকল স্তম্ভকে বেষ্টন করে একটি কারাগারের প্রতিকৃতি হয়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ঘটনাবহুল সংগ্রামী জীবনে বার বার কারারুদ্ধ হবার বিষয়টিকে উপস্থাপন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিটি প্রতীকী কারাগারের বাইরের অংশে স্থাপন করে বুঝানো হয়েছে, কারাগারের লৌহকপাট তাঁর সংগ্রামী চেতনাকে অবরুদ্ধ করতে পারেনি। জাতির পিতার প্রতিকৃতিটির পাশেই রয়েছে গ্রানাইট পাথরে উৎকীর্ণ ইউনেস্কোস্বীকৃত বিশ্বঐতিহ্যের অংশ, ‘বাঙালির অভূতপূর্ব জাগরণের বিশুদ্ধ সংগীতবঙ্গবন্ধুর মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকালের পরিধি পেরিয়ে সকল শোষিত, বঞ্চিত, মুক্তিকামী মানুষের পথপ্রদর্শক। কালের Ðিকে জয় করে বঙ্গবন্ধু সকল দেশের, সকল কালের। শিল্পকর্মের তাই নাম দেওয়া হয়েছেকালজয়ী মুজিব

গত বছর ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর . মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান এই ম্যুরালটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। তিনিই এই ম্যুরালটি নির্মাণের পরিকল্পক। তাঁরই চিন্তাপ্রসূত ম্যুরালটি নির্মাণে আর্থিক সহায়তা করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং অগ্রণী ব্যাংক। ম্যুরালটি নির্মাণে পর্যন্ত পঞ্চাশ লাখ টাকারও কিছু বেশি ব্যয় হয়েছে। এখনও আশপাশের কিছু সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ বাকি রয়েছে যা কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ম্যুরালটি নির্মাণ কাজ উদ্বোধনকালে উপাচার্য তাঁর অনুভতি ব্যক্ত করে বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ম্যুরালটি নির্মিত হলেও মহান মুক্তিযুদ্ধের বধ্যভূমিতে গড়ে উঠা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়েকালজয়ী মুজিবনামাঙ্কিত শিল্পকর্ম বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথার্থ সম্মান শ্রদ্ধার স্মারক হিসেবে অনাগতকাল ধরে শিক্ষার্থীসহ সবার মনন চেতনায় প্রেরণা যোগাবে। ম্যুরালটির প্রতিরূপ বিনির্মাণ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃৎশিল্প ভাস্কর্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কনক কুমার পাঠক। বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল বাস্তবায়ন কমিটির তত্ত¡াবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগ আনুসাঙ্গিক কাঠামো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে। প্রায় মাসের পরিশ্রমে ম্যুরালটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *