মুকসুদপুর হাসপাতালে চিকিৎসক লাঞ্চিত ৩ ঘন্টা চিকিৎসা সেবা বন্ধ, আটক দুই
মুকসুদপুর (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে লাঞ্চিতের ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে মুকসুদপুর থানা পুলিশ। এতে ৩ ঘন্টা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকে। গ্রেফতারকৃত ১ জন ইউপি সদস্য, অপরজন তার ছেলে। গতকাল শনিবার সকাল ১০ টার সময় হাসপাতালের মহিলা ও শিশু বিভাগে রাউন্ড চলাকালিন এই ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মাহমুদুর রহমান জানান, শনিবার সকালে হাসপাতালের মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে নিয়মিত রাউন্ড চলকালীন সময়ে উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার মিরাজ মুন্সী তার পুত্রবধুকে তন্নি বেগম (২৫) নিয়ে আসেন। তখন মেডিকেল অফিসার রাউন্ডে অন্য রোগী দেখছিলেন। তাকে তার রোগী আগের দেখার কথা বল্লে তিনি হাতের রোগীটা দেখেই আসতে চান। কিন্তু তারা সেটা না মেনে উত্তেজিত হয়ে চিৎকার চেচামেচি করতে থাকেন। এবং ডা: মনিম উল হাবিবকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। এ সময় রোগীর স্বামী এই উপজেলার গোবিন্দপুর ইউপি ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য মিরাজ মুন্সী (৫৫) এবং তার ছেলে সোহেল মুন্সী (২৮) অধিকতর উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালের স্টাফ, নার্স ও ডাক্তারের উপর হামলা চালায়। হাসপাতালের সকল কর্মীরা একযোগে তাদের প্রতিহত করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে না আসলে মুকসুদপুর থানায় জানালে থানা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
পরে মুকসুদপুর হাসপাতালে কর্মরত সকল ডাক্তার কর্মচারী হাসপাতালের সমস্থ চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলিমা আলী ঘটনাস্থলে এসে জরুরী বিভাগ চালু রাখার অনুরোধ করলে চিকিৎসরা জরুরী বিভাগ চালু রাখলেও বিচার পাওয়ার আগ পর্যন্ত আউটডরের চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখেন। সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে ৩টা পর্যন্ত হাসপাতালের ইমার্জেন্সী ব্যাতীত সকল চিকিৎসা বন্ধ থাকে।
গোপালগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ, জেলা বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডা: মুন্সী মাঈনউদ্দীন, মুকসুদপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাবির মিয়া, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলিমা আলী, সহকারী কমিশনার ভুমি আসমত হোসেন, থানার ওসি মীর্জা আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক নুরুল ইসলাম জুননু, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক হায়দার হোসেন উপস্থিত হন। ন্যায় বিচারের আশ্বাসে ডাক্তারগণ চিকিৎসা সেবায় ফিরিয়ে আসেন। পরে এই ঘটনায় মুকসুদপুর হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে ২ জনকে আসামী করে মুকসুদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
এই ঘটনায় আটকৃতরা হলো গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার মিরাজ মুন্সী ও তার ছেলে সোহল মুন্সী। তাদের বাড়ী গোবিন্দপুর ইউনিয়নের দাশেরহাট গ্রামে। মুকসুদপুর থানার ওসি মীর্জা আবুল কালাম আজাদ জানান আসামীদের আটক করে গোপালগঞ্জ জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।