মুকসুদপুরে পিঞ্জিরা বেগম হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
মুকসুদপুর (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে দুই সন্তানের জননী পিঞ্জিরা বেগম (৩০) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগের প্রেক্ষিতে মূল রহস্য উৎঘাটন ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে পিঞ্জিরা বেগমের ভাই কাইয়ুম বেগ। শনিবার সকালে মুকসুদপুর সংবাদ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মুকসুদপুরে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান- গত ১৫জুন দিবাগত রাতে মুকসুদপুর থানাধীন কাশালিয়া গ্রামে আমার আপনবোন পিঞ্জিরা বেগম (৩০)কে শ্বশুর বাড়ির লোকজন হত্যা করে একটি ঘরের আড়ার সাথে ঝুলাইয়া রাখে। ঘটনার দিন আনুমানিক রাত ১১টার সময়, আমার ভাগ্নি চাদনী (১০) আমাদেরকে মোবাইল ফোনে জানায় যে তার আম্মু (পিঞ্জিরা)কে কারা যেন মেরে মেলে আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখছে। ঘটনা শোনার পর আমরা মোটরসাইকেল যোগে দ্রæত ঘটনাস্থল কাশালিয়া যাই।
উল্লেখ্য যে, আমরা ফোনে বলি আমরা না পৌছানো পর্যন্ত লাশ নামাবা না। কাশালিয়া পৌছানোর পর আমরা দেখতে পাই মুকসুদপুর থানার এস আই শফিকুল ও দুইজন কনস্টেবল সেখানে উপস্থিত আছেন এবং তাদের উপস্থিতিতে আমরা দেখতে পাই বোন পিাঞ্জরার লাশ আড়ার সংগে ঝুলছে, লাশের পা মাটির সাথে মিশে ভাজ হয়ে আছে।
পুলিশ লাশ নামানোর সময় শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন এবং শরিরের বিভিন্ন স্থানে কাদা মাটি লাগানো দেখা যায়, মুখে থুতনির কাছে ও ঠোটের নিচে আঘাতের চিহ্নসহ রক্তের দাগ দেখা যায়। স্থানীয়দের ভাষ্য এবং লাশের অবস্থা দেখে বুঝা যায় এটা আতœহত্যা নয়, পরিকল্পিত হত্যা। পরে পুলিশ লাশ নামানোর পর ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করে আমরা মুকসুদপুর থানায় মামলা করতে গেলে দায়িত্বরত অফিসার হত্যা মামলা নিতে অপরাগতা জানান এবং অপমৃত্য মামলা হিসেবে মামলা রুজু করে। পরে আমরা কোর্টে গিয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। আদালতের নির্দেশে মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে।
উল্লেখ্য আমার বোন পিঞ্জিরা বেগমের সহিত এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী কাশালিয়া গ্রামের কিরন শেখের সাথে ১২বছর পূর্বে কাবিন মূলে বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকে কিরন শেখ ও তার পরিবার বিভিন্ন সময় আমার বোনকে নির্যাতন করত এবং যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ ও মারধর করত। একাধিকবার এ বিষয়ে স্থানীয় সালিস মীমাংসা করা হয়।
আমরা বোনের সুখের কথা ভেবে কিরন শেখকে আমাদের নিজ খরচে মালয়েশিয়া পাঠাই। তারপরও কিরনের পরিবারের নির্যাতন থেমে থাকেনি, বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য তারা চাপ দিতে থাকে। ঘটনার কিছু দিন আগেও কিরনের মা ভাই ভাবি মিলে আমার বোনকে মারধর ও গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমরা আমাদের বোনের দুইটি ছোট বাচ্চার কথা চিন্তা করে আমার বোনকে বুঝিয়ে আবারও কিরনের বাড়িতে পাঠাই।
আমার বোনের মৃত্যুর ঘটনার পরও কিরন দেশে আসে নাই। কিন্তু সে সুকৌশলে সুযোগ বুঝে মালেশিয়া অবস্থানরত আমার অপর দুই ভাইয়ের বাসা থেকে টাকা পয়সা নিয়ে গত সপ্তাহে বাড়িতে চলে আসে। কিরন বাড়িতে আসার পরই আমাদেরকে মামলা উঠানোর জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে। কিরন দেশে এসে আমাদের নামে ২টি ভিত্তিহীন হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
সংবাদ সম্মেলনে পিঞ্জিরার ভাই কাইয়ুম বেগ, সন্তান পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী চাদনি(১০), শিশু আবু বক্কার (৪), বড়বোন সালেহা বেগম বক্তব্য রাখেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।