January 7, 2025
জাতীয়

মীর নাছিরের ১৩, ছেলের ৩ বছরের সাজা হাই কোর্টে বহাল

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

জরুরি অবস্থার সময় করা অবৈধ সম্পদের মামলায় বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনকে জজ আদালতের দেওয়া ১৩ বছরের সাজা বহাল রেখেছে হাই কোর্ট। নাছিরের ছেলে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে দেওয়া তিন বছরের কারাদণ্ডও হাই কোর্টের রায়ে বহাল রাখা হয়েছে।

আপিল বিভাগের আদেশে এ মামলায় পুনরায় শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আব্দুল হাকিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেয়। আদালতে নাছির ও তার ছেলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

রায়ের পর খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, হাই কোর্টের এই রায় জজ আদালতে যেদিন পৌঁছাবে, সেদিন থেকে তিন মাসের মধ্যে দুই আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে এই আইনজীবী বলেন, আপিল করার সুযোগ আছে। আপিল করতে হলে তাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে।

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সময় দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মীর নাছির।

ওই বছর মার্চে মীর নাছির ও তার ছেলে মীর হেলালের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করে দুদক। কমিশনে জমা দেওয়া সম্পদের হিসাব বিবরণীতে তথ্য গোপন ও ঘোষিত আয়ের বাইরে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয় ওই মামলায়।

পরের মাসেই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন দুদকের তখনকার উপ পরিচালক আবদুল­াহ আল জাহিদ। সেখানে ৩ কোটি ২২ লাখ ১১ হাজার ৬৩৭ টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপন এবং ২৯ কোটি ২৮ লাখ ৯৫ হাজার ৯৯৭ টাকার অবৈধ সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক অমর কুমার রায় ২০০৭ সালের ৪ জুলাই যে রায় দেন, সেখানে নাছিরকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড এবং পঞ্চাশ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আর বাবার দুর্নীতিতে ‘সহযোগিতা করায়’ হেলালকে ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের জেল দেওয়া হয়। পাশাপাশি ‘অবৈধভাবে অর্জিত’ দুই আসামির সমস্ত সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে সরকারকে নির্দেশ দেয় জজ আদালত।

সেই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে হাই কোর্টে আলাদাভাবে আপিল করেন বাবা ও ছেলে। হাই কোর্ট ২০১০ সালের ১০ আগস্ট মীর নাছির এবং একই বছরের ২ আগস্ট মীর হেলালের সাজা বাতিল করে রায় দেয়।

দুদক হাই কোর্টের ওই রায় বাতিল চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে। ২০১৪ সালের ৪ জুলাই দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে আপিল বিভাগ। হাই কোর্টের রায় বাতিল করে নতুন করে হাই কোর্টে আপিল শুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়। দীর্ঘ শুনানির পর মীর নাছির ও মীর হেলালের আপিল খারিজ করে মঙ্গলবার রায় দিল হাই কোর্ট।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান পরে সাংবাদিকদের বলেন, বিচারিক আদালত যেভাবে রায় দিয়েছিল সেটাই বহাল রাখা হয়েছে। তাদের জারিমানাও বহাল রাখা হয়েছে। পাশাপাশি (সম্পদ) বাজেয়াপ্ত রাখতে রায়ে যে নির্দেশনা ছিল, সেই নির্দেশনাও বহাল রেখেছেন হাই কোর্ট।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *