মিয়ানমারে নির্বাচন : বিজয় দাবি করছে সু চির এনএলডি
মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে ‘প্রশ্নাতীতভাবে’ নিজেদেরকে বিজয়ী দাবি করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি বা এনএলডি। ২০১১ সালে মিয়ারমারের রাজনীতি থেকে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী কিছুটা সরতে শুরু করার পর রোববার (৮ নভেম্বর) দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
অনানুষ্ঠানিক ভোটের হিসাবের ওপর ভিত্তি করে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন এনএলডি নির্বাচনে বিজয় দাবি করে বলছে, ২০১৫ সালের প্রথম সাধারণ নির্বাচনের চেয়েও এবার আরও বেশি আসনে জয়লাভ করবে তারা। নির্বাচনের পরদিন সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দলটির মুখপাত্র মায়ো নিয়ান্ত এমন দাবি করেন।
মায়ো নিয়ান্ত বলেন, সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ৩২২ এর বেশি আসনে জয় পেয়েছে এনএলডি। দেশব্যাপী ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত দলের এজেন্টরা এই তথ্য দিয়েছে। ২০১৫ সালে ৩৯০টি আসনে জয় পেয়েছিল এবার সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে তার দল নিরঙ্কুশ জয় পেতে চলছে বলে দাবি এনএলডি মুখপাত্রের।
তবে এনএলডি দেশটির সাধারণ নির্বাচনে জয় দাবি করলেও রোহিঙ্গাদের আবাসভূমি সংঘাতকবলিত রাখাইন রাজ্যে দলটি হেরে গেছে। সেখানে ভালো ফল করেছে সংখ্যালঘু রাখাইনদের নিয়ে গঠিত রাজনৈতিক দল আরাকান ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি)। অবশ্য রাখাইনের বেশির ভাগ আসনে ভোট বাতিল করা হয়েছিল।
একসময় স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে খ্যাতি অর্জন করা সু চি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কার্যত কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েন। রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে অং সান সু চির গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের মধ্যে জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারলেও বিদেশে তার সুনামে ধস নেমেছে।
নির্বাচন কমিশন থেকে আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা করা হয়নি এখনো। তবে সু চির দলএনএলডি এই নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসছে বলে বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে। ৫০ বছর ধরে সেনা ও সেনা-সমর্থিত সরকারের অবসান ঘটিয়ে ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে সুচির এনএলডি নিরঙ্কুশ জয় পায়।
তবে মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ, নিয়মতান্ত্রিক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য জাতিসংঘ আহ্বান জানালেও সেখানকার ভোটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ছাড়া মিয়ানমারের রাজনীতিতে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রভাব এখনও প্রবল। সংবিধান অনুযায়ী, দেশটির পার্লামেন্টের ২৫ শতাংশ আসন সেনাসদস্যদের জন্য বরাদ্দ।