মিয়ানমারকে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ
মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভরত প্রতিবাদকারীদের প্রতি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করার জন্য দেশটির সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। বিক্ষোভকারীদের প্রতি যে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখানো হলে ‘গুরুতর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে। এভাবেই সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর উদ্দেশে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর পর দু’রাত ধরে মিয়ানমারের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা নেটব্লকস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার মধ্যরাত ১টা থেকে ইন্টারনেট সেবা প্রায় পুরোপুরিই বন্ধ রয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষ দূত শানার বার্জেনার জোর দিয়ে বলেছেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের প্রতি অবশ্যই পুরোপুরি সম্মান দেখাতে হবে এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রতিহিংসা পরায়ণ হওয়া যাবে না। জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক জান্তার দ্বিতীয় শীর্ষ নেতাকে ফোন করে শানার বার্জেনার সতর্ক করেছেন।
শানার বার্জেনার মিয়ানমারকে এটাও বলেছেন যে, সেখানে যা ঘটছে তা পুরো বিশ্ব দেখছে এবং কঠোর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে এর পরিণতি মারাত্মক হতে পারে।
এই আলোচনা সম্পর্কে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বলছে, সামরিক সরকারের দ্বিতীয় শীর্ষ কমান্ডার সোয়ে উইন জাতিসংঘের দূতের সঙ্গে প্রশাসনের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন এবং তাকে ‘মিয়ানমারে যা ঘটছে সেখানকার সত্যিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে’ তথ্য দিয়েছেন।
মিয়ানমারের রাস্তাগুলোতে সাঁজোয়া যান টহল দিতে দেখা গেছে। অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের দমনে এই পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। স্থানীয় সময় রোববার রাত ১টা থেকে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। এখনও অবস্থা একই রকম আছে।
মিয়ানমারের টেলিকম অপারেটররা জানিয়েছেন, তাদেরকে রোববার রাত ১টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান নেটব্লক বলছে, এই আদেশ কার্যকর হওয়ার পর ইন্টারনেটের গতি ছিল স্বাভাবিক অবস্থার ১৪ শতাংশ। অপরদিকে নেপিদোর এক চিকিৎসক জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাতের বেলাতেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছে সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫শ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।