December 21, 2024
আন্তর্জাতিক

মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের মৃত্যু

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক ৯১ বছর বয়সে মারা গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার মিশরের রাষ্ট্রীয় সংবাদে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানানো হয়েছে। তিনি একটি সামরিক হাসপাতালে মারা গেছেন। জানুয়ারির শেষ দিকে মুবারকের অস্ত্রোপচার হয়। এরপর তাকে তার নাতির সঙ্গে ছবিতে দেখা গিয়েছিল।

তবে গত শনিবার মুবারকের ছেলে আলা জানান, তাকে ইনটেনসিভ কেয়ারে রাখা হয়েছে। এরপরই মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় টিভি তার মৃত্যুর খবর জানাল। ২০১১ সালে টানা সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর মিশরীয় সামরিক বাহিনী তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। মুবারক মিশরের অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী শাসক ছিলেন। তিন দশক শাসনক্ষমতায় ছিলেন তিনি।

২০১১ সালে বিপ্লবের সময় বিক্ষোভকারী হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে কারাবন্দি করা হয়েছিল। পরে ২০১৭ সালের মার্চে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।

হোসনি মুবারকের জন্ম ১৯২৮ সালের ৪ই মে মিশরের উত্তরাঞ্চলে কাফর-আল মেসেলহা-তে। কৈশরেই তিনি যোগ দিয়েছিলেন বিমান বাহিনীতে। কিন্তু একজন যোদ্ধা পাইলট হয়েও তিনি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়ায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

মুবারকের নেতৃত্বেই মিশর ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে একটি চুক্তি করতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে। আবার একইসঙ্গে মিশরের বিমান বাহিনীর কমান্ডার এবং উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে মুবারক তার ভূমিকা দিয়ে জাতীয় বীরের সম্মান লাভ করেছিলেন।

রাজনীতিতে প্রবেশের আগে মুবারক মিশরীয় বিমান বাহিনীর একজন কমান্ডার হিসেবে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি মিশরের উপ-রাষ্ট্রপতি হন।

১৯৮১ সালের ৬ই অক্টোবরে মিশরের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতকে হত্যার পর মুবারক মিশরের প্রেসিডেন্ট হন। মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ায় মুবারকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য পরবর্তী আমেরিকান প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে তার সম্পর্ক দৃঢ় হয়েছিল এবং তিনি শত শত কোটি ডলারের সাহায্য পেয়েছিলেন। তবে মুবারকের শাসনামলে মিশর বিপুল পরিমাণ সামরিক সাহায্য পাওয়ার পরও বেকারত্ব, দারিদ্র্য এবং দুর্নীতি বাড়তে থাকে।

আরব বসন্তের প্রেক্ষাপটে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে মিশরে মুবারকের শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখা দেয়। ওই সময় একই ধরনের বিক্ষোভে তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন। এর ১৮ দিন পর মুবারকও পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *