November 29, 2024
জাতীয়

‘মিথ্যা বলার পারদর্শিতায় ফখরুলকে পুরস্কার দেওয়া যায়’

 বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করে ইনিয়ে বিনিয়ে মিথ্যা কথা বলেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।

তিনি বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলন করে তিনি সবাইকে বিভ্রান্ত করতে চান।

আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারবো না। মিথ্যা কথা যে আপনি এত চমৎকারভাবে বলতে পারেন, এতে ওনার কথা শুনে আমি মাঝে মধ্যে বিভ্রান্ত হয়ে যাই। মিথ্যা বলার পারদর্শিতার জন্য তাকে নিঃসন্দেহে পুরস্কার দেওয়া যেতে পারে। ’

শুক্রবার (১৮ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে ‘৯৫ ফাউন্ডেশন কাজিপুর’ আয়োজিত আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে হানিফ বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব আপনি অন্যদের নির্যাতনের কথা বলেন। কিন্তু আপনি কি ভুলে গেছেন ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে আপনারা কীভাবে আপনাদের দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে নির্যাতন করেছেন আওয়ামী লীগের ওপর। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে শুধু হত্যা নয়, আজকে যার স্মরণ সভায় এসেছি, নাসিম ভাই, যিনি মন্ত্রী ছিলেন, তাকেও আপনারা রাজপথে বারবার নির্যাতন করেছেন, রক্তাক্ত করেছেন। তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, আসাদুজ্জামান নূর ও সাবের হোসেন চৌধুরীর মতো মানুষকে আপনারা রাজপথে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছেন। এই সব কি ভুলে গেছেন?

তিনি বলেন, আপনারা বলেন আপনাদের কর্মীদের ওপর আমরা অত্যাচার করি। আপনারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে গাড়িতে আগুন দেন। আপনি মিথ্যাচার করে, বিভ্রান্ত করে মানুষকে বক্তব্য দিচ্ছেন। বক্তব্য দিয়ে আবার বলছেন, কথা বলার অধিকার নেই, তাহলে এতক্ষণ রাজপথে দাঁড়িয়ে আপনারা কি করলেন। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতেন, মিথ্যাচার করছেন, অভিযোগ করছেন কই আপনাদের কখনো তো আঘাত করা হয় না। আপনাদের তো বাঁধাও দেওয়া হয় না। যখন আপনার দলের সন্ত্রাসীরা মানুষের ওপর আক্রমণ করে, ভাঙচুর জ্বালাও-পোড়াও করে, তখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে কখনো কখনো আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়। এর বাইরে তো আপনারা নির্বিঘ্নে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। আমাদের কি সেই কাজ করতে দিয়েছিলেন?

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া নিয়ে হানিফ বলেন, বিএনপির রাজনীতি এখন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। মির্জা ফখরুল ইসলামের কথা শুনে মনে হয় যে উনি বোধ হয় খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের চেয়ারম্যান। ম্যাডাম খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা কিন্তু একবারও বলছেন না ওনার পার্টিকুলার এই রোগের জন্য এই দেশেই ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে। তারা বলছে না অথচ, বলছেন মির্জা ফখরুল সাহেব। আমাদের দেশে চিকিৎসা সম্ভব না হলে কেউ ভারতে যাযন, ব্যাংকক যান, সিঙ্গাপুর যান। কিন্তু উনি কোনো দেশে যেতে চান সেটা কি বলেছেন, তা বলেন না। খালেদার চিকিৎসা তাদের কাছে মূখ্য নয়, চিকিৎসা নিয়ে তাদের নাটক করা, স্ট্যান্ডবাজি করা, রাজনীতি করা মূখ্য উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা বহুবার বলেছি, খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তার সুচিকিৎসা হোক। সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক। এটা আমরা চাই, প্রত্যাশা করি।

আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা মোহাম্মদ নাসিমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তিনি বলেন, আমরা যদি নাসিম ভাইয়ের মতো সাহসী যোদ্ধা এবং বৈষম্যহীন কর্মী বান্ধব হতে পারি, তাহলে এই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ সারা জীবন মানুষের আস্থা জয় করে চলতে পারবে। আওয়ামী লীগকে কেউ ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে না।

স্মরণ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সংসদ সদস্য (এমপি) প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু, ৯৫ ফাউন্ডেশন কাজিপুরের সভাপতি প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান প্রমুখ।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *