November 30, 2024
আন্তর্জাতিক

মিডিয়া ভবনে হামলা : ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্বাধীন তদন্ত চায় এপি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় আল-জাজিরা ও এপি’র কার্যালয় থাকা বহুতল ভবন আল-জালা টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেয়ায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে এপি। তারা বলেছে, মানুষ এই ঘটনার প্রকৃত তথ্য জানতে চায়।

গত ১৫ মে (শনিবার) এক বিমান হামলায় আল জাজিরা ও এপি কার্যালয় ভবন গুঁড়িয়ে দেয় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।

এছাড়াও পৃথকভাবে মিডিয়া ওয়াচডগ হিসেবে পরিচিত রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) শীর্ষক সাংবাদিকদের সংগঠন ইসরায়েলের এই হামলাকে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) তদন্তের আবেদন জানিয়েছে।

রোববার এপির নির্বাহী সম্পাদক স্যালি বুজবি বলেন, গাজায় ১২ তলাবিশিষ্ট আল-জালা টাওয়ারে হামলার স্বপক্ষে ইসরায়েল সরকার এখন পর্যন্ত স্পষ্ট কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি।

হামলার আগে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এপির সাংবাদিকদেরকে ভবন থেকে সরিয়ে নেয়ার জন্য এক ঘণ্টার সময় দেয়। ভবনটি হামাসের সামরিক কার্যালয় ও অস্ত্র কারখানা হিসেবে ব্যবহৃত হতো বলে ইসরায়েল পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু বলেন, ওই ভবনে হামাসের উপস্থিতি ছিল কি-না সেই তথ্য ইসরায়েল নির্দিষ্ট গোয়েন্দাদের মাধ্যমে সরবরাহ করতে পারে। এক মন্তব্যে তিনি দাবি করেন, ওই ভবনটি হামাসের গোয়েন্দা অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

বুজবি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আল-জালা টাওয়ারে এপির কার্যালয়। কখনোই কেউ বুঝতে পারেননি কিংবা জানেননি যে, সেখানে হামাসের উপস্থিতি থাকতে পারে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে প্রকৃত তথ্য অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে।

বুজবি বলেন, আমরা একটি সংকটকালীন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। এই সংঘাতের পক্ষে আমরা নই। আমরা শুনেছি, ইসরায়েলের কাছে প্রমাণ আছে, কিন্তু আমরা জানি না, তাদের কাছে কী প্রমাণ রয়েছে। গতকাল যা ঘটেছে সে ব্যাপারে এই মুহূর্তে স্বাধীন তদন্ত হওয়া জরুরি বলে আমরা মনে করি। একটি সংঘাতময় পরিস্থিতিতে উভয়পক্ষের মধ্যে কী ঘটছে বিশ্বের তা জানার অধিকার রয়েছে- যোগ করেন তিনি।

আল-জালা টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ তদন্তের আবেদন জানিয়েছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)। আরএসএফের মহাসচিব ক্রিস্টোফ ডেলোর বলেছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে মিডিয়া আউটলেটে হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল। এভাবে মিডিয়া আউটলেটগুলো ধ্বংস করে ইসরায়েলি বাহিনী কেবল সংবাদ কার্যক্রমের অগ্রহণযোগ্য ক্ষতিই করছে না, তারা একটি জনসম্পৃক্ত সংঘাতের বিষয়ে মিডিয়া কাভারেজেও বাধা দিচ্ছে।

আল-জালা টাওয়ারে হামলার পর একাধিক টুইটে আরএসএফ মহাসচিব বলেন, ভবনটি হামাস বা অন্য কোনো যোদ্ধা বাহিনী ঢাল হিসেবে ব্যবহার করলেও তা মিডিয়াকে সামরিক লক্ষ্যবস্তু বানানোর বৈধতা দেয় না। এটি পরিষ্কার যুদ্ধাপরাধ।

তিনি বলেন, গাজায় গত ১১ মে থেকে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ার ওপর বোমাবর্ষণের বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর ফাতু বেনসৌদাকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছি। আমরা এটিকে যুদ্ধাপরাধ বলে মনে করছি।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *