মা-দুই সন্তান খুন: বাবার চিরকুট ধরে তদন্ত করছে পুলিশ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ঢাকার দক্ষিণখানে মা ও দুই সন্তান খুনের ঘটনায় একটি চিরকূট ধরে চলছে তদন্ত; ওই চিরকূটটি নিহত শিশু দুটির বাবার বলে পুলিশের দাবি। চিরকূটে নিজেকে ‘নিকৃষ্ট লোক’ উল্লেখকারী বিটিসিএলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রকিবউদ্দিনের কোনো সন্ধান এখনও মেলেনি। তার ফোনটিও বন্ধ। রকিব তার স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে হত্যা করেছে বলে পুলিশের ধারণা। তবে কী কারণে, তা এখনও জানা যায়নি।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কে সি মডেল স্কুলের পেছনে প্রেমবাগান এলাকায় একটি বাড়ির পাঁচতলায় রকিবের বাসায় তার স্ত্রী মুন্নী বেগম (৩৭), তাদের ছেলে ফোরকান উদ্দিন (১২) ও মেয়ে লাইভার (৪) লাশ পাওয়া যায়। মুন্নীকে মাথায় ভারী বস্তুর আঘাতে এবং শিশু দুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। গৃহকর্তা রকিব তখন থেকে লাপাত্তা।
উত্তরখান থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সরোয়ার হোসেন খান রবিবার বলেন, তারা ঘরে একটি চিরকূট পেয়েছেন, তার সূত্র ধরেই চলছে তদন্ত। ১২ ফেব্রæয়ারিতে লেখা ওই চিরকূটে নিজেকে ‘নিকৃষ্ট লোক’ হিসেবে তুলে ধরে দুই সন্তান ও স্ত্রী হত্যার কথা স্বীকারের পাশাপাশি আরও লেখা ছিল, তার লাশ রেললাইনে পাওয়া যাবে।
পুলিশ কর্মকর্তা সারোয়ার বলেন, প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে চিরকূটের হাতের লেখা রকিবউদ্দিনের। তবে এটা পরীক্ষার পর আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে। শুক্রবার লাশ পাওয়া গেলেও হত্যাকাÐ বুধবার বিকালে ঘটেছে বলে পুলিশের ধারণা।
পুলিশ জানতে পেরেছে, রকিব বুধবার বিকালে তার এক সহকর্মীকে ফোন করে জানিয়েছিলেন যে বৃহস্পতিবার তিনি অফিসে যাবেন না। ফোনে কললিস্টের সূত্র ধরে সেই সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলে তা জানা গেছে। তবে সেটাই ছিল তার ফোনে শেষ কথা বলা। এরপর থেকে ফোনটি বন্ধ বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা সারোয়ার। রকিবের সন্ধান পেলেই এই হত্যারহস্যের জট খুলবে বলে মনে করছে পুলিশ।
ডিএমপির উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা অনুসন্ধান চালিয়ে প্রকৃত ঘটনা বের করার চেষ্টা করছি। রকিবউদ্দিনের খোঁজ পেলে হত্যার ঘটনা সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে। চিরকূটের সূত্র ধরে উত্তরখান থানা পুলিশ রেলওয়ে পুলিশকে বলেছে, ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত কিংবা আহত অজ্ঞাতনামা কোনো ব্যক্তির খবর পেলে তাদের জানাতে।
কমলাপুর রেলওয়ে থানার ওসি রকিব উল হোসেন বলেন, ঘটনাটি তারা শুনেছেন এবং সচেতন রয়েছেন। তবে ১২ ফেব্রæয়ারি পর থেকে রেললাইনে কাটা পড়া কোন মৃত বা আহত ব্যক্তির খোঁজ তারা পাননি বলে জানিয়েছেন।