মায়ের সঙ্গে প্রেমিককে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলায় ছেলেকে হত্যা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে মায়ের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমিকের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত দেখে ফেলায় শিক্ষার্থী সিয়াম মাহমুদকে (১১) হত্যা করা হয়েছে বলে জবানবন্দি দিয়েছে মামলার মূল আসামি বর্তমান ওয়ার্ড মেম্বার মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে জামাল মেম্বার। গতকাল সোমবার দুপুরে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. মইনুল হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জানা গেছে, চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় মির্জাগঞ্জের মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নের সুলতানাবাদ গ্রামের আলী আকনের পুকুরের পূর্ব পাশের ধানি জমিতে খাটাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম মাহমুদের গলাকাটা, দুই হাতের কব্জি কাটা ও ডান চোখ জখম অবস্থায় লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ২৭ জানুয়ারি মির্জাগঞ্জ থানায় নিহতের বাবা শাজাহান গাজী বাদী হয়ে মামলা করেন। পরে ১৫ জুলাই সকালে মূল আসামি ৬নং মজিদবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুপার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মির্জাগঞ্জের শিক্ষার্থী সিয়াম মাহমুদ হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে। মামলার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল আসামি সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জামাল জানায়, শাজাহান গাজী ও ইসমাইল গাজীর মধ্যে সম্পত্তির বিরোধের কারণে বারবার শাজাহান গাজীর বাড়িতে আশা যাওয়ার একপর্যায়ে শাজাহানের স্ত্রীর সঙ্গে জামাল মেম্বারের প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়।
তিনি আরও জানান, গত ২৫ জানুয়ারি এলাকায় ওয়াজ মাহফিল চলাকালে মাগরিবের আজানের পর জামাল মেম্বার ও শাজাহানের স্ত্রীর মধ্যে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে সিয়াম রুমের মধ্যে ঢুকে দেখে ফেলে এবং ওই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টায় থাকে। একপর্যায়ে জামাল মেম্বার আসামিদের সঙ্গে আলোচনা করে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে সিয়ামকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সিয়ামকে ঝালমুড়ি খাওয়ার কথাবলে মাহফিলে ডেকে নিয়ে যায়। ঝালমুড়ি খাওয়া অবস্থায় মাফলার দিয়ে মুখ বেঁধে তুলে নিয়ে যায়। পরে আলী আকনের পুকুরের পূর্ব পাশের ধানি জমিতে মাফলার দিয়ে বেঁধে সিয়ামের গলা ও দুই হাতের কব্জি কেটে চলে যায়।
তিনি আরও জানান, দোষ স্বীকার করে গতকাল সোমবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্য সহযোগীদের আইনের আওতায় আনতে বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।