মাস্ক না পরায় বয়স্কদের কান ধরানো সেই সহকারী কমিশনার প্রত্যাহার
তিনজন বয়স্ক ব্যক্তিকে কান ধরিয়ে ‘বেআইনি ও অকর্মকর্তাসুলভ আচরণ’ করায় যশোরের মনিরামপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
যশোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শফিউল আরিফ শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ওই কর্মকর্তাকে মনিরামপুর থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।”
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই কর্মকর্তা সিনিয়র সিটিজেনের সঙ্গে অমানবিক, বেআইনি ও অকর্মকর্তাসুলভ আচরণ করেছেন। আমরা তাকে প্রত্যাহার করতে ডিসিকে নির্দেশ দিয়েছি।”
জনপ্রশাসন সচিবের নির্দেশনার পর পরই এসিল্যান্ড সাইয়েমাকে প্রত্যাহার করে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ন্যস্ত করা হয়।
মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রামণ ঠেকাতে অফিস-আদালত বন্ধ রেখে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানাচ্ছে সরকার। আর এটা বাস্তবায়ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে মাঠ প্রশাসন কাজ করছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসান
শুক্রবার যশোরের মনিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সাইয়েমা হাসান। বিকালে চিনাটোলা বাজারে মাস্ক না পরায় তরকারি বিক্রেতা ও ভ্যানচালক তিন বয়স্ক ব্যক্তিকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে নিজের মোবাইল ফোনে সেই ছবি ধারণ করেন এই কর্মকর্তা।
রাতে ওই ছবি ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে। সরকারি কর্মকর্তাদের ‘কাণ্ডজ্ঞান’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে। বয়স্কদের সঙ্গে সাইয়েমার এই আচরণের বিচার দাবি করেন কেউ কউ।
জনপ্রশাসন সচিব হারুন বলেন, “মনিরামপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ওই সিনিয়র সিটিজেনদের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে স্যরি বলে আসতে বলেছি।”
আর এসি ল্যান্ড সাইয়েমাকে সেই তিন বয়স্ক ব্যক্তির বাড়ি যেতে নিষেধ করা হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, “ওই কর্মকর্তা ভুল করেছেন, আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব যেন অন্যরা শিখতে পারে।
“সব জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কেউ যেন অকর্মকর্তাসুলভ আচরণ না করেন। কেউ এ ধরনের আচরণ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা আমরা ডিসিদের দিয়েছি। বলেছি, মনে রাখতে হবে তারা মাস্টার নয়, সেবক; তারা যেন জনগণের সেবা করেন।”