মামলা হয়নি, অনিশ্চয়তার মুখে ইমরান খান হত্যাচেষ্টার তদন্ত
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান হত্যাচেষ্টায় সন্দেহভাজন শুটার ও অস্ত্র সরবরাহকারীসহ এ পর্যন্ত তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু মামলা নিয়ে অচলাবস্থার কারণে আইনি জটিলতার মুখে পড়েছে এ ঘটনার তদন্ত। মামলার আসামি হিসেবে এক জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম অন্তর্ভুক্তির দাবি থেকে পিটিআই প্রধান সরে না আসার জেরে এখনো নথিভুক্ত হয়নি অভিযোগ। খবর ডনের।
বলা হচ্ছে, ইমরান খানকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা দায়ের নিয়ে বড় ঝামেলায় পড়েছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চৌধুরী পারভেজ এলাহী। তিনি ওই সেনা কর্মকর্তার নাম এফআইআর-এ অন্তর্ভুক্ত না করার পক্ষে মত দিয়েছেন। কিন্তু তাতে নারাজ ইমরান ও পিটিআই’র অন্যান্য নেতারা।
বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার (৪ নভেম্বর) পাঞ্জাবের মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রচুর তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ফয়সাল শাহকার এবং সরকারের উচ্চপদস্থ একাধিক কর্মকর্তা।
এ সম্পর্কে অবগত একটি সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে মামলা নথিভুক্ত করার সব আইনি দিক সম্পর্কিত গুরুতর বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেছেন, মামলা দায়েরে আরও বিলম্ব হলে প্রমাণাদি সুরক্ষিত রাখা এবং ইমরান খানের ওপর সশস্ত্র হামলায় জড়িতদের শাস্তিপ্রদানের সব প্রচেষ্টা নস্যাৎ হতে পারে, এ নিয়ে কথা হয়েছে বৈঠকে।
গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের ওয়াজিরাবাদে পিটিআই’র লংমার্চে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় ইমরান খানের ওপর গুলির ঘটনা ঘটে। এতে একজন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছেন। ইমরানের পায়ে দুটি গুলি লেগেছে।
সূত্রটি বলেছে, দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মুখ্যমন্ত্রী এলাহী মামলায় জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার নাম যোগ করার যুক্তির বিরোধিতা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী ও সমমনা পিটিআই নেতারা এ বিষয়ে একাধিক বৈঠক করে সাবেক সেনা কর্মকর্তার নাম বাদ দেওয়ার জন্য বাকিদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন।
তিনি বলেন, পুলিশ প্রধান সরকারকে জানিয়েছেন, তদন্ত শুরুর জন্য অপরাধের স্বীকৃতি সম্পর্কিত প্রথম প্রামাণিক নথি হলো এফআইআর। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, ঘটনাস্থলেই ধরা পড়া অভিযুক্ত শুটারসহ তিন সন্দেহভাজনকে আটক করার পরেও এ বিষয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া থমকে গেছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইজিপি জানিয়েছেন, ইমরান খানকে হত্যাচেষ্টার এফআইআর নথিভুক্ত করার জন্য পুলিশ এখনো কোনো আবেদন পায়নি।
একটি যৌথ তদন্ত দল (জেআইটি) গঠনের বিষয়ে পাঞ্জাব পুলিশ মনে করছে, মামলা দায়েরের আগে জেআইটি গঠন করা যুক্তিযুক্ত হবে।
এই জটিলতা নিরসনে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী এবং পিটিআই’র শীর্ষ নেতারা আরও এক দফা বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, শুক্রবার আরও দুই সন্দেহভাজন ওয়াকাস এবং সাজিদ বাটকে আটক করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, তারা প্রধান সন্দেহভাজন নাভিদ বশীরের কাছে ২০ হাজার রুপিতে পিস্তল ও গুলি বিক্রি করেছিল। প্রধান সন্দেহভাজনকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গুজরানওয়ালা কাউন্টার টেরোরিজম ডিপার্টমেন্টের (সিটিডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।