November 25, 2024
খেলাধুলা

‘মামলা না হলে জাতীয় দলে থাকতেন নাসির’

ডিভোর্স না হওয়া সত্ত্বেও অন্যের স্ত্রীকে বিয়ের অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিরুদ্ধে এই মামলা না হলে তিনি হয়তো জাতীয় দলে থাকতেন এবং দলের জন্য মুখ্য ভূমিকা রাখতেন। নাসির-তামিমার পক্ষে করা জামিন আবেদনের শুনানিতে এসব কথা বলেন তাদের আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ হিরু।

রোববার (৩১ অক্টোবর) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসীমের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান ক্রিকেটার নাসির হোসেন, স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মি ও শাশুড়ি সুমি আক্তার।

আবেদনের শুনানিতে কাজী নজিবুল্লাহ হিরু বলেন, তালাক না দিয়ে আসামি তামিমা আসামি নাসিরকে বিয়ে করেছেন মর্মে বাদী মামলা করেন। তালাক কাজী অফিসে এন্ট্রি আছে। তালাকের নোটিশ পাঠানোর দায়িত্ব কাজীর। আর পোস্ট অফিস ডাক রশিদের কপি সংরক্ষণ করে কী করে নাই, তা আসামিদের ওপর বর্তায় না। আসামি নাসির ক্রিকেটার হওয়ায় অনেক জনপ্রিয়। আজ এ মামলায় না পড়লে হয়তো এখন জাতীয় দলের সঙ্গে থাকতেন। দলের জন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারতেন। আদালত সমন দিয়েছিলেন। আসামিরা স্বেচ্ছায় আদালতে এসেছেন। আসামিরা সমন অনুযায়ী স্বেচ্ছায় আসলে তাদের জামিন দেওয়া আদালতের একটি প্র্যাকটিস।

অপরদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী ইসরাত হাসান জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারা থাকলেও আবেদনে তা উল্লেখ নাই। আইন অনুযায়ী নোটিশ জারি করার দায়িত্ব কাজী নয়, যিনি তালাক দেবেন তার ওপর বর্তায়। ডাক রশিদ জালিয়াতির মাধ্যমে তালাক দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে, যা তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ১০ হাজার টাকা বন্ডে প্রত্যেক আসামির জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর এই তিনজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন একই আদালত।

ওইদিন মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) মিজানুর রহমান তিনজনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন জমা দেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, তামিমার আগের স্বামী রাকিব হাসানকে ডিভোর্স দেওয়া সংক্রান্ত কাগজপত্র জালজালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। নাসিরকে বিয়ের আগে রাকিবকে ডিভোর্স দেননি তামিমা। স্বামী থাকা অবস্থায় অবৈধ বৈবাহিক সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে তারা ৪৬৮/৪৭১/৪৯৪/৪৯৭/৫০০/৩৪ ধারায় অপরাধ করেছেন মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।  এই প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের পর বাদীপক্ষের আইনজীবী ইসরাত হাসান আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। তবে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা না দিয়ে তাদের আদালতে হাজির হতে সমন দেন।

চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার স্বামী দাবি করে রাকিব হাসান নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামলায় আগের বিয়ে গোপন থাকা অবস্থায় অন্যত্র বিয়ে, অন্যের স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে যাওয়ায় মানহানির অভিযোগ আনা হয়।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের ৮ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। তামিমা পেশায় একজন কেবিন ক্রু। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা রাকিবের নজরে আসে। পরে পত্র-পত্রিকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে জানেন।

মামলায় আরও বলা হয়, তামিমা ও নাসিরের এমন অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে রাকিব ও তার শিশু কন্যা মানসিক বিপর্যস্ত। আসামিদের এমন কার্যকলাপে রাকিবের চরমভাবে মানহানি হয়েছে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *