মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানে যৌথ অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
রাজধানীর বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানে যৌথ অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনএসআইর সদস্যরা। ইচ্ছাকৃতভাবে মার্কিন ডলার মজুদ করা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে এ অভিযান চালানো হয়। গতকাল মতিঝিল ও পল্টন থানা এলাকার বেশকিছু মানি এক্সচেঞ্জের দোকানে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে অংশ নেওয়া এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তথ্য আছে ইচ্ছাকৃতভাবে ডলার মজুদের। কেউ কেউ গুজব ছড়াচ্ছে যে ডলারের দাম সামনে বাড়বে। তাই ডলার এখন কম দামে কিনে রাখলে কয়েকদিনের মধ্যে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবে। এসব গুজবের কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে মার্কিন ডলার মজুদ করা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে এ অভিযান চালানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এ সময় ডলারের একটা ক্রাইসিস চলছে। বাজার স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করছে। এরপরও কেউ যদি ডলার অবৈধভাবে মজুদ করে রাখে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের লাইসেন্সও বাতিল করা হতে পারে। আজকের (গতকাল) অভিযান এরই অংশ। অভিযান আরও পরিচালনা করা হবে। যেখানেই অন্যায় হচ্ছে জানব সেখানেই অভিযান চলবে।
এদিকে, বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে মার্কিন মুদ্রা। সোমবার খোলা বাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলার বিক্রি হয় ১১২ টাকায়। মঙ্গলবারও একই দামে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ডলার বিক্রি করে। বায়তুল মোকাররমের একটি মানি এক্সচেঞ্জের দোকানি সোলায়মান জানান, ডলারের দাম বাড়েনি। ১১২ টাকাই চলছে। আমরা কিনছি ২-১ টাকা কমে।
কাগজপত্রবিহীন মানি এক্সচেঞ্জ সিলগালা : ডিআইটি রোডে অবস্থিত জেমস মানি এক্সচেঞ্জের কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকায় এটিকে সিলগালা করা হয়েছে। মতিঝিলের দিলকুশায় অবস্থিত সুগন্ধা মানি এক্সচেঞ্জ, দোহার মানি এক্সচেঞ্জ, জামান মানি এক্সচেঞ্জ ও ওয়েলকাম মানি এক্সচেঞ্জে ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো রেজিস্টার পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের লাইসেন্স বাতিল করলেও উচ্চ আদালতে রিটের মাধ্যমে অনেক বছর ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে। নয়া পল্টনে অবস্থিত বিজয় মানি এক্সচেঞ্জে অবৈধভাবে রাখা বিদেশি মুদ্রা থাই বাথ পাওয়া গেছে। পল্টনে অবস্থিত ইস্টার্ন ইউনিয়ন মানি চেঞ্জিং ও ফয়েজ মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেডে পরিদর্শনে রেজিস্টারের তথ্যের সঙ্গে কম্পিউটারে রাখা তথ্যের অমিল দেখা যায়। দিলকুশায় অবস্থিত বুড়িগঙ্গা মানি এক্সচেঞ্জ ও মিসা মানি এক্সচেঞ্জ, পল্টনে অবস্থিত দেওয়ান মানি এক্সচেঞ্জে বিদেশি মুদ্রা ও দেশীয় মুদ্রার হিসাবে পার্থক্য দেখা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গুজব ছড়িয়ে একটি পক্ষ ডলারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। এসব কথায় নিজের কষ্টের উপার্জনের টাকা বিনিয়োগ না করার পরামর্শ দেন তারা। কারণ যে কোনো সময় ডলারের দাম কমে যেতে পারে। এতে ক্ষতির মুখে পড়বেন এসব ক্রেতা। এসব গুজবে কান না দিয়ে দেশের উন্নয়নে সবার একসঙ্গে কাজ করতে হবে।