মাথায় ফুল গুঁজে সু চির জন্মদিনে সমর্থকদের বিক্ষোভ
মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির আজ ৭৬তম জন্মদিন। সামরিক জান্তা সরকারের হাতে বন্দি অবস্থায়ই কাটবে তার এবারের জন্মদিন। তবে সমর্থকরা বাইরে থেকে তার প্রতি ভালোবাসা দেখিয়েছেন। শনিবার (১৯ জুন) মাথায় ফুল গুঁজে সু চির মুক্তির দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন তারা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক হিসেবে সু চি প্রায়ই মাথায় ফুল গুঁজে রাখতেন। মূলত সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই তার সমর্থকরা মাথায় ফুল গুঁজে বিক্ষোভ করেছেন।
সু চির সঙ্গে মানাবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন মানবাধিকারকর্মী থেট সুই উইন। শনিবারের বিক্ষোভেও মাথায় চুল গুঁজে সামিল হন তিনি। তিনি বলেন, ‘সু চিসহ সকলের মুক্তি চাই। সু চির ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয়েছে।’
তবে এসব বিষয়ে সামরিক জান্তার এক মুখপাত্রের কাছে মন্তব্য জানতে চাইলেও তিনি কিছু বলেননি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলে নেয় সামরিক বাহিনী। ওই সময় দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, সু চিসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করে সেনাবাহিনী। এরপর থেকে প্রতিদিনই জান্তা সরকারের বিরোধিতায় রাস্তায় বিক্ষোভ করছেন দেশটির জনগণ। জান্তাবিরোধী ওই বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত পাঁচ হাজার জনকে।
বর্তমানে অবৈধভাবে ওয়াকিটকি রাখা, করোনাবিধি ভঙ্গ, দুর্নীতি এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ভঙ্গের দায়ে বিচারের মুখোমুখি সু চি। এর মধ্যে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ভঙ্গের দায়ে তার ১৪ বছরের জেলও হতে পারে।
আগামী সোমবার (২১ জুন) তার মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। সু চির আইনজীবীরা বলছেন, তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অযৌক্তিক। তার সমর্থকরাও বলছেন, সু চিকে রাজনীতি থেকে সরানোর লক্ষ্যেই এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।
এদিকে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের চার মাস পর মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। পাশাপাশি, দেশটির জান্তা সরকারের প্রতি একটি নিন্দাপ্রস্তাবও গৃহীত হয়েছে।
শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারের ওপর অস্ত্রনিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে ১১৯টি দেশ। স্বৈরশাসিত বেলারুশই একমাত্র এর বিপক্ষে মত দেয়। আর চীন-রাশিয়াসহ মোট ৩৬টি দেশ প্রস্তাবে মতামত দেয়া থেকে বিরত থাকে।