মসজিদে বিস্ফোরণ: তিতাসের পাইপে দুইটি ছিদ্রের সন্ধান
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
নারায়ণগঞ্জে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদ এলাকায় মাটি খুঁড়ে পাইপলাইনে দুইটি ছিদ্রের সন্ধান পেয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকাল থেকে মাটি খোঁড়ার পর বিকালে এ ছিদ্র দুটির সন্ধান মেলে। এরপরও তিতাসের শ্রমিকরা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মাটি খোঁড়ার কাজ চালিয়ে যান।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণে অর্ধশতাধিক মানুষ অগ্নিদগ্ধ হন। এতে এ পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মফিজুল ইসলাম বলেন, লিকেজ সন্ধান এবং মসজিদের নিচে কোনো পুরনো পাইপলাইন আছে কি-না খতিয়ে দেখতে মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু হয়েছে।
বিকেল পৌনে ৩টার দিকে মসজিদের উত্তর পাশে বেইজমেন্টের একটু ওপরে পাইপলাইনে দুইটি ছিদ্র পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, মঙ্গলবার গ্যাস সরবরাহ চালু করে সেই ছিদ্র দুইটি পরীক্ষা করে দেখা হবে। এর আগে গত রোববার সকালে তিতাসের শ্রমিকেরা ঘটনাস্থলে মাটি খোঁড়ার জন্য আসলে তাদেরকে সেখান থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার সকাল ৭টার দিকে পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামের মসজিদের সামনে ৪০ থেকে ৫০ শ্রমিক শাবল, হামার, ছেনি, কোদাল, টুকরিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে মাটি খোঁড়ার জন্য কাজ শুরু করেন। মসজিদের পূর্ব দিকে, পূর্ব দিকের সামনের সড়ক ও উত্তর দিকের দুইটি স্থানে আরসিসি কেটে তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন শনাক্তের চেষ্টা চালান তারা। মাটি খনন করার সময় মসজিদের উত্তর দিকে আবাসিক সংযোগের পাইপলাইনে তারা দুইটি ছিদ্র দেখতে পান।
এদিকে, বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে পশ্চিম তল্লাসহ আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে গত দুই দিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছে বাসিন্দারা। এর আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি গ্যাসের লিকেজের বিষয়ে মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসীর অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে মাটি খুঁড়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিস্ফোরণে মসজিদের ছয়টি এসি পুড়ে গেছে, জানালার কাচ উড়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ প্রাথমিকভাবে মনে করছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট ও গ্যাস পাইপলাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস জমে এ বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, জেলা প্রশাসন, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি, সিটি করপোরেশন পৃথক পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সোমবার জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ বিষয়ে গণশুনানির আয়োজন করে। সকাল থেকে ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত গণশুনানিতে মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল গফুরসহ ১৮ জন সাক্ষ্য দেন।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ