মশিয়ালীতে তিন খুনের ঘটনায় ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
দ. প্রতিবেদক
খুলনার খানজাহান আলী থানাধীন মশিয়ালীতে গুলি করে তিনজনকে হত্যার ঘটনায় ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ শনিবার রাতে নিহত সাইফুল ইসলামের পিতা সাইদুল শেখ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় বহিস্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ জাকারিয়া হাসান, তার দুই ভাই শেখ জাফরিন হাসান ও শেখ মিল্টন হাসানসহ ২২ জনকে আসামী করা হয়েছে। খানজাহান আলী থানার ডিউটি অফিসার এসআই ধনঞ্জয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলা নং ১২, তারিখ: ১৮/০৭/২০০২০ ইং।
এর আগে তিন খুনের অন্যতম হোতা শেখ জাফরিন হাসানকে গ্রেফতার করেছে কেএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। শনিবার বিকাল ৫টায় যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার দাতপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবীর পিপিএম (সেবা)।
শেখ জাফরিন হাসান মশিয়ালী গ্রামের মৃত হাসান আলী শেখের ছেলে এবং খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে অনেক আগেই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
কেএমপি কমিশনার জানান, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় যশোরের বাঘারপাড়া থেকে শেখ জাফরিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার জাফরিনের ভাই গুলিবর্ষণকারী জাকারিয়ার শ্বশুর কোরবান আলী, শ্যালক আরমান ও চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মুজিবর নামে এক ব্যক্তিকে অস্ত্রসহ খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সহ-প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া এবং তার ভাই খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি জাফরিন ও মিল্টন পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়। মুজিবরের গ্রেফতার নিয়ে মূল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরপর গ্রামের বেশ কয়েকজন জাকারিয়ার বাড়িতে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে যায়। এসময় জাকারিয়া ও তার লোকজনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জাকারিয়া, জাফরিন ও মিল্টন তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এ সময় গুলিতে নজরুল ইসলাম, গোলাম রসুল, সাইফুল ইসলাম, শামীম, রবি, সুজন, রানা ও খলিলসহ ৮-১০ জন গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নজরুল ইসলাম ও গোলাম রসুলকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্যান্যদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ১টার দিকে সাইফুল ইসলাম মারা যায়। এ ঘটনার পর রাত ২টার দিকে বিক্ষুব্ধ অপরপক্ষের গণপিটুনিতে জাকারিয়ার সহযোগী জাহিদ শেখ (৩০) মারা যায়।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ