‘মরিচা’ ধরা হরতাল আর গণআন্দোলনের অস্ত্র নয় : ওবায়দুল
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে সারা দেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা আধাবেলা হরতালে কোনো আবেদন ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল শনিবার দুপুরে ধানমণ্ডিতে দলীয় সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যাকলয়ে সম্পাদকমন্ডলীর সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।
গ্যাসের দাম বাড়ানোয় শনিবার বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা হরতালের মধ্যে রাজধানীর পল্টন, প্রেসক্লাব, শাহবাগ এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টির মধ্যেই মিছিল করেন সিপিবি, বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলনসহ জোটভুক্ত বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। প্রগতিশীল ছাত্র জোটের কর্মীরা শাহবাগ এলাকায় সড়বে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করায় ওই মোড় হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
বাম জোটের হরতালকে আওয়ামী লীগ কিভাবে দেখছে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণের পক্ষ থেকে এই হরতালের কোনো আবেদন কেউ কি কোথাও দেখেছেন? কোথাও কি আপনারা হরতালের চিহ্ন পেয়েছেন? ঢাকা শহরের চিরপরিচিত দৃশ্য আজও বহাল আছে।
আমি মনে করি বাংলাদেশে যারা মনে করেন হরতালের মাধ্যমে গণআন্দোলন করা যাবে, হরতাল এখন গণআন্দোলনের অস্ত্র নয়। হরতাল নামক অস্ত্রটিতে মরিচা ধরে গেছে। আন্দোলনের জন্য এখন হরতাল কার্যকর নয়। গ্যাসের বাড়তি দাম মেনে নিতে এর আগে আহŸান জানানো কাদের আবারও এই মূল্যবৃদ্ধিকে যৌক্তিক বলেন।
গ্যাসের দামের ব্যাপারে আবারও বলি, সমন্বয় করার জন্য গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। সরকারকে যে ভর্তুকি দিতে হত, এখনও দিতে হবে। কাজেই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি বাস্তব এবং যুক্তিসম্মত। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পিছনে এলএনজি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়াই সরকারের মূল লক্ষ বলে বিশিষ্টজন এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তকব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা সরকারবিরোধীদের কথা, বিরোধীদল বলার জন্য বলছে। সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় ১৫ আগস্ট সামনে রেখে মাসব্যাপী কর্মসূচি, জাতীয় সম্মেলনের সাংগঠনিক প্রস্তুতি, বিভিন্ন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধাচরণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
“ডিসিপ্লিন ব্রেক করে, আশকারা পেলে এর প্রবণতা বাড়ে। তাই আমরা এর লাগাম টেনে ধরতে চাই। তাদের বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হবে। কেউ এমপি, মন্ত্রী হয়ে দলের বিরুদ্ধে কাজ করলে তাকে মনোনয়ন নাও দেওয়া হতে পারে, কম গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হতে পারে। নানা রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, বলেন কাদের।
আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সদস্য সংগ্রহ অভিযান সম্ভাব্য ২১ জুলাই শুরু হবে। তবে এর আগে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, এ কে এম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আইন বিষয়ক সম্পাদক রেজাউল করিম, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া, কেন্দ্রীয় সদস্য রিয়াজুল কবির কাওছার, মারুফা আক্তার পপি।