মতিন মিয়ার জোড়া গোলে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিতে বাংলাদেশ
ক্রীড়া ডেস্ক
বাঁচা-মরার লড়াইয়ে অন্য এক বাংলাদেশ দলকে দেখা গেল। জামাল ভূইয়া, ইয়াসিন খানের মতো নির্ভরযোগ্য যোদ্ধাদের ছাড়াই এলো কাঙ্খিত জয়। আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা মেলে শঙ্কার কালো মেঘ উড়িয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের সেমি-ফাইনালে উঠল জেমি ডের দল।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রবিবার ‘এ’ গ্রæপের শেষ ম্যাচে মতিন মিয়ার নৈপুণ্যে শ্রীলঙ্কাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। একটি করে জয় ও হারে ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রæপ রানার্সআপ হয়ে সেরা চারে উঠেছে স্বাগতিকরা। সেমি-ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ‘বি’ গ্রæপের চ্যাম্পিয়ন বুরুন্ডি। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফিলিস্তিনের কাছে এই দুই দলই ২-০ ব্যবধানে হেরেছিল। টানা দুই হারে ছিটকে গেল শ্রীলঙ্কা।
চার বদল এনে শ্রীলঙ্কা ম্যাচের একাদশ সাজান ডে। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে বাইরে জামাল, ফ্লুতে আক্রান্ত ইয়াসিন। আর রায়হান হাসান ও মামুনুল ইসলামকে বাইরে রেখে মানিক হোসেন মোল্লা, বিশ্বনাথ ঘোষ, রিয়াদুল ইসলাম ও মাহবুবুর রহমান সুফিলকে নামান কোচ। বদলে যাওয়া দলটি শুরু থেকে চড়াও হতে থাকে শ্রীলঙ্কার রক্ষণে।
দশম মিনিটে মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ক্রসে সাদউদ্দিনের হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার ছয় মিনিট পর টুর্নামেন্টে প্রথম গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। মানিকের বাড়ানো বল বাঁ পায়ে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডান পায়ের শটে জাল খুঁজে নেন মতিন মিয়া। জাতীয় দলের হয়ে গোলের খাতাও খুললেন বসুন্ধরা কিংসের এই ফরোয়ার্ড।
একটু পর মতিনের আরেকটি প্রচেষ্টা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়নি। ২১তম মিনিটে স্বাগতিকদের আরেকটি দারুণ সুযোগ নষ্ট হয়। ডান দিক দিয়ে একক প্রচেষ্টায় গোল করতে গিয়ে গোলরক্ষকের গায়ে মারেন ইব্রাহিম। বাঁ দিকে তখন ফাঁকায় ছিলেন সুফিল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে শ্রীলঙ্কার ফরোয়ার্ড রাজ্জাক আহমেদ ওয়াসিমের শট অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। ৫১তম মিনিটে বাংলাদেশের সোহেল রানা ডি-বক্সে ঢুকে ভালো একটি সুযোগ নষ্ট করেন ক্রসবারের ওপর দিয়ে মেরে।
৫৮তম মিনিটে জোহার মোহাম্মদ জারওয়ানের শট ক্রবারের ওপর দিয়ে গেলে শ্রীলঙ্কার হতাশা বাড়ে। দুই মিনিট পর সুফিলকে তুলে নিয়ে মামুনুলকে নামান ডে।
একক প্রচেষ্টায় দুর্দান্ত এক গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে মতিন। ৬৪তম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে জুদে সুপানের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা এই ফরোয়ার্ড বুলেট গতির দৌড়ে ঢুকে পড়েন ডি-বক্সে। এরপর গোলরক্ষককে কাটিয়ে নিখুঁত টোকায় জাল খুঁজে নেন। মেতে ওঠে বঙ্গবন্ধুর গ্যালারি।
৮৩তম মিনিটের গোলে জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। বাঁ দিক থেকে রাকিব হোসেনের ক্রসে ইব্রাহিম গোলমুখ থেকে সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন। শেষ দিকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন তপু। এরপর রাকিবের বুলেট গতির শট গোলরক্ষক ফিস্ট করে ফেরালে ব্যবধান আর বাড়েনি। তাতে অবশ্য কমেনি বাংলাদেশের জয়োৎসব।