‘মওলানা ভাসানীকে নিয়ে কুটূক্তিকারীকে ক্ষমা চাইতে হবে’
মওলানা ভাসানীকে নিয়ে জাতীয় পার্টির এমপি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান তিনি।
রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক-ইন সেন্টারে শনিবার ‘সংকটে অর্থনীতি: কর্মপরিকল্পনা কী হতে পারে’ শীর্ষক সংলাপে শামীম হায়দার পাটোয়ারী কোন যোগ্যতা ও কোন সাহসের ভিত্তিতে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর সঙ্গে দেশের অর্থ মন্ত্রীর তুলনা করলেন বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি। একই সঙ্গে অবিলম্বে মওলানা ভাসানী নিয়ে কুটূক্তি করার জন্য শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে প্রকাশ্যে জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা আহ্বান জানান তিনি।
গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ‘সংকটে হাসপাতালে চলে যেতেন ভাসানী, অর্থমন্ত্রীও কি তাকে অনুসরণ করছেন, এ মন্তব্যের মাধ্যমে শামীম পাটোয়ারী নিজের অজ্ঞতা ও রাজনৈতিক দৈন্যতা প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রমাণ করলেন স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও প্রকৃত অর্থে তিনি তা বিশ্বাস করেন না।
ন্যাপ মহাসচিব আরও বলেন, ‘শতাব্দির শ্রেষ্ঠ মহানায়ক মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী সম্পর্কে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য প্রমাণ করে শুধু ব্যারিস্টার হলেই মানুষ জ্ঞানি ও দেশপ্রেমিক হয় না। কোনো দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক কর্মী মওলানা ভাসানী সম্পর্কে এ ধরনের ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য দিতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘শামীম হায়দার পাটোয়ারী হয়তো জানেনই না, মওলানা ভাসানী ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলীম লীগ যা পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ, ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট গঠন, ৫৭ সালে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘আসসালামু আলাইকুম’ উচ্চারণের মাধ্যমে বাঙ্গালিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখানো, ৬৯’র গণআন্দোলনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তকরা, ৭০-এ ঘূর্ণিঝড় পরবর্তীতে ভোটের বাক্সে লাথি মারো পূর্ব বাংলা স্বাধীন কর, ১৯৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের প্রধান, ১৯৭৬ সালে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ এভাবে শতশত রাজনৈতিক ঘটনার মহানায়ক হচ্ছেন মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী।’
গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ‘দিনের ভোট রাতের আঁধারে চুরি করে সংসদ সদস্য হয়ে দেশপ্রেমের উজ্জ্বল নক্ষত্র, স্বাধীন বাংলাদেশের পথিকৃৎ মওলানা ভাসানী সম্পর্কে এই বক্তব্যের জন্য তাকে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। অবৈধ রাজনৈতিক দলের নেতা হয়ে জনগণের ভোট চুরি করে সংসদ সদস্য হয়ে মওলানা ভাসানীর জুতা বহনের যায় যোগ্যতা নেই তার মন্তব্য প্রমাণ করে দেশের রাজনীতি আজ অরাজনৈতিক মানুষরা কলুষিত করে ফেলছে। এসকল নীতিহীন মানুষদের রাজনীতি থেকে বিদায় করতে হবে।’
তিনি বলেন, আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকার নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের মুক্তির কণ্ঠস্বর, উপমহাদেশের অবিসংবাদিত নেতা, আজীবন সংগ্রামী মওলানা ভাসানীকে যারা হেয় করতে ধৃষ্টতা দেখায় তারা দেশ ও রাজনীতির বর্জ্য ছাড়া আর কিছুই নয়। শামীম পাটোয়ারী লুটেরা এবং নিপীড়ক গোষ্ঠীর পদলেহন কারী মাত্র। এরা সর্বাবস্থায় ফ্যাসিবাদ আর পুঁজিবাদের রক্ষক।