ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাংবাদিক আরিফকে দেওয়া সাজা স্থগিত
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
কুড়িগ্রামে গভীর রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে দেওয়া সাজার রায় ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে হাই কোর্ট। এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই স্থগিতাদেশ দেয়।
পাশাপাশি কুড়িগ্রামের সদ্য সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এস এম রাহাতুল ইসলামসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৩৫-৪০ জনের বিরুদ্ধে বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানের করা অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আরিফুল ইসলামের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশিস ভট্টাচার্য্য।
ইশরাত হাসান পরে বলেন, টাস্কফোর্সের নামে আরিফুল ইসলামকে সাজা দেওয়া এবং তাকে আটক করা কেন বেআইন ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- সে বিষয়ে রুলও জারি করেছে হাই কোর্ট।
কুড়িগ্রাম জেলার ডিসির দায়িত্ব পালন করে আসা সুলতানা পারভীন শহরের একটি সরকারি পুকুর সংস্কারের পর নিজের নামে ‘সুলতানা সরোবর’নাম রাখতে চেয়েছিলেন জানিয়ে বাংলা ট্রিবিউনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় দশ মাস আগে।
এরপর গত ১৩ মার্চ বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে গভীর রাতে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মাদক রাখার অভিযোগে এক বছরের কারাদÐ ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ওই ঘটনায় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহল তীব্র প্রতিবাদ জানায়। ডিসির সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করেন অনেকে। বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ ১৫ মার্চ জনস্বার্থে হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেন।
সমালোচনার মধ্যে আরিফকে জামিনে মুক্তি দেয় কুড়িগ্রামের আদালত। পরে তিনি হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার পর তাকে ‘বিবস্ত্র করে অমানুষিক নির্যাতন’ করা হয়। চোখ বেঁধে তার কাছ থেকে স্বাক্ষরও নেওয়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর ডিসি সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এস এম রাহাতুল ইসলামকে কুড়িগ্রাম থেকে অপসারণ করে সরকার।