ভিসির পদত্যাগ দাবিতে বৃষ্টি মাথায় আন্দোলন গোপালগঞ্জে
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
মুষলধারে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে পঞ্চম দিনে পড়েছে ভিসি প্রফেসর খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের অপসারণ আন্দোলন। আগের দিন বিকাল থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ১৬ ঘণ্টা বৃষ্টিতে ভিজেও শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েই আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আইন বিভাগের ছাত্র সোহাগ হোসেন বলেন, বৃষ্টিসহ যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন ভিসির পদত্যাগ না করিয়ে আমরা ঘরে ফিরব না। এ কষ্ট আমাদের কষ্ট মনে হচ্ছে না।
গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কার করা হলে এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের সমালোচনার মুখে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি-স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশন শুরু করেন। আন্দোলন থামাতে কর্তৃপক্ষ ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এরপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ আসতে থাকে, শুক্রবার রাত থেকে হলের খাবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে হলে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
গত শনিবার দুপুরে গোপালগঞ্জ শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার পথে বহিরাগতরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করেছে। এতে ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে তারা দাবি করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলা, অর্থনীতি, সিএসিই বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের গায়ে হাত পড়েছে। ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। ভিসি পতনের আন্দোলনে অনড় অবস্থানে রয়েছেন তারা।
তাদের একজন বলেন, হল ত্যাগ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধের মধ্যেও খেয়ে না খেয়ে আমরা আন্দোলন করছি। সেই কষ্টের কাছে বৃষ্টি কিছুই না। কোনো কিছুই আমাদের আন্দোলন দমাতে পারবে না।
দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, অন্যায়ভাবে বহিষ্কারসহ শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, শিক্ষকদের মানসিক নির্যাতন, কথায় কথায় শোকজসহ ভিসির নির্যাতনে অতিষ্ট শিক্ষার্থীরা বলে জানান তারা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সহকারী প্রক্টর পদ থেকে অব্যাহতি নেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হুমায়ুন কবির। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে সমর্থন করে সংহতি প্রকাশ করেছেন সচেতন শিক্ষক সমাজ।