January 21, 2025
জাতীয়

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আটকে আছে ‘মানবতা’

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে গত চারদিন ধরে ‘অমানবিকভাবে’ দিন কাটছে এক নারীর। দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর অস্ত্রের মুখে কোনো দেশেই তিনি প্রবেশ করতে পারছেন না। বিজিবি-বিএসএফ পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠক বিফলে গেছে। সর্বশেষ দুই বাহিনীর সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকও কোনো ফল আসেনি।

খাগড়াছড়ির রামগড় ও ভারতের সাব্রæম সীমান্তে তীব্র রোদ ও ঝড়বৃষ্টিতে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন ওই নারী। স্থানীয়রা খাবারও দিতে পারছেন না। অভিযোগ রয়েছে বিএসএফ জোর করে ওই নারীকে রামগড়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে খাগড়াছড়ির রামগড় বিওপি সংলগ্ন এলাকার ফেনী নদী দিয়ে ওই নারী নোম্যান্স ল্যান্ড হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চান। অপরদিকে ওই নারীকে বাংলাদেশে ঢুকতে না দিয়ে ফেরত পাঠায় বিজিবি। কিন্তু বিএসএফের বাধার কারণে তিনি ফেনী নদী অতিক্রম করতে পারেননি।

অভিযোগ রয়েছে- বিজিবির রামগড় বিওপি সংলগ্ন এলাকা দিকে বিএসএফ জোরপূর্বক ওই নারীকে রামগড়ে ঠেলে পাঠায়। এ সময় সাব্রæমের কাঁঠালছড়ি ক্যাম্পের বিএসএফকে সেখানকার গ্রামবাসীরাও সহায়তা করেন।

শুক্রবার (০৩ এপ্রিল) সকালে ফেনী নদীর পাড়ে বিজিবি ও বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে প্রথম বৈঠক হলেও কোনো পক্ষ নারীকে গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। বিকালে নদীর মধ্যবর্তী স্থানে ৪৩ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. তারিকুল হাকিম ও সাব্রæমের ৬৬ বিএসএফের কমান্ডিং অফিসার রাজীব কুমার সিংয়ের নেতৃত্বে বৈঠক হয়। বৈঠকস্থলে ওই নারীও উপস্থিত ছিলেন। উভয়পক্ষ থেকে ওই নারীর নাম, পরিচয় জানার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে তাকে নদীর মধ্যবর্তী স্থানে রেখে দুই পক্ষ নিজ নিজ দেশে ফিরে যায়।

পরে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ফেনী নদীতে ভারতের নির্মাণাধীন মৈত্রী সেতুতে পুনরায় বিজিবি-বিএসএফের সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক হয়। এতে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন গুইমারা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল জি এইচ এম সেলিম হাছান ও বিএসএফের পক্ষে উদয়পুর সেক্টরের ডিআইজি জামিল আহমেদ। প্রায় ৩০ মিনিটের এ বৈঠকও নিষ্ফল অবস্থায় শেষ হয়।

রামগড়ের স্থানীয় সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন লাভলু বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন এই নারীর প্রতি সীমান্তের কোনো অংশ হতেই ন্যূনতম মানবিকতা দেখানো হচ্ছে না। এটি মানবতার চরম লঙ্ঘন। বিএসএফ অত্যন্ত নির্দয়ভাবে মারধর করে তাকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে। অসহায় ওই নারীর জীবন বাঁচাতে জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন।

তবে এই বিষয়ে ৪৩ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. তারিকুল হাকিম সাংবাদিকদের জানান, বিএসএফই বৃহষ্পতিবার জোর করে ওই নারীকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। এখন তারা তা স্বীকার করছে না। কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়েছে।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *