ভারতে মোদীকেই চান পাকিস্তানের ইমরান
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
রাত পোহালেই ভারতে লোকসভা নির্বাচন। বিভিন্ন জনমত জরিপ ভোটযুদ্ধে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এগিয়ে থাকার কথাই বলছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও বিজেপি’র জয় চান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল জিতলে দু’দেশের মধ্যে কাশ্মীর ইস্যুতে শান্তি আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার ভালো সুযোগ থাকবে বলেই মত তার।
ইসলামাবাদে একদল বিদেশি সাংবাদিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমরান বলেন, যদি বিরোধী দল কংগ্রেস এবারের নির্বাচনে জেতে তবে দলটি হয়ত ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর সংকট সমাধানে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে ভয় পাবে। কারণ, ডানপন্থিদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ার আশঙ্কায় থাকবে তারা। ফলে কাশ্মীর সমস্যামেটাতে কংগ্রেস ততটা এগোবে না।
বরং যদি বিজেপি জেতে তবে কাশ্মীরের কিছু কিছু বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হতে পারে। যদিও মোদীর শাসনামলে কাশ্মীরের মুসলমান এবং ভারতের সাধারণ মুসলমানদের অত্যন্ত বিরূপ আচরণের শিকার হতে হয়েছে তারপরও এটি হতে পারে। ভারতে এখন যা ঘটছে এমনটি আমি কখনো কল্পনাও করতে পারিনি। সেখানে মুসলমান হওয়ার কারণে হামলার শিকার হতে হচ্ছে, বলেন ইমরান।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং কট্টর জাতীয়তাবাদের উপর নির্ভর করে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে বলেও মনে করেন ইমরান।
এ সপ্তাহে বিজেপি জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের বাসিন্দাদের বিশেষ অধিকার দেওয়া কয়েক দশকের পুরনো একটি আইন বাতিল করার অঙ্গীকার করেছে। ভারতের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, পাকিস্তান জঙ্গিদের ‘মদদদাতা’। এ বিষয়ে ইমরান বলেন, তার দেশ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। নিজের স্বার্থেই পাকিস্তানকে জঙ্গিবিরোধী অবস্থান নিতে হবে। ৩০ হাজারেরও বেশি মাদ্রাসাকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং কয়েক হাজার সাবেক জঙ্গিকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
সবাই জানে, পাকিস্তানে এখন যা হচ্ছে, তা আগে কখনোই হয়নি। বাইরের চাপের কথা ভুলে যান- আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ দেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দেশের ভবিষ্যতের জন্যই আমরা আর সশস্ত্র জঙ্গিদের কার্যক্রম চালাতে দেব না।
পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিরোধ কাশ্মীর নিয়ে। উভয় দেশ পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর ভারত-পাকিস্তান তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে; যার মধ্যে দুইবারই কাশ্মীর নিয়ে।
গত ফেব্র“য়ারিতে পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর কাশ্মীর ইস্যুতে পাক-ভারত আরো একটি যুদ্ধ প্রায় শুরুই হয়ে গিয়েছিল। ইমরানের উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত উত্তেজনা কমে আসে। বিবিসি’র সংবাদদাতা জন সিম্পসনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমরান বলেছেন, কাশ্মীর প্রশ্নে ভারতের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তা এ অঞ্চলের জন্য দারুণ ব্যাপার হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কি বার্তা দিতে চান জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হতে হবে। কাশ্মীর নিয়ে উত্তেজনা চলতে দেওয়া যায়না। ইমরান বলেন, দু’দেশের সরকারেরই প্রধান কাজ দারিদ্র্য কমানো। সংলাপের মধ্য দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করাই দারিদ্র্য কমানোর পথ। আর বিরোধ একটাই- তা হচ্ছেকাশ্মীর।