ভারতে বিক্ষোভের মধ্যেই মন্ত্রিসভায় ছাড়পত্র পেল জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জী
ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনসিআর) নিয়ে উত্তপ্ত আবহের মধ্যেই ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার বা জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জী (এনপিআর)-কে ছাড়পত্র দিল কেন্দ্রীয় সরকার।
আদমশুমারির আগে এনপিআর-এর তথ্য আপডেট করার জন্য মন্ত্রিসভা মঙ্গলবার বাজেট বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।
জাতীয় জনগণনা কমিশন জানিয়েছে, আসাম বাদে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এনপিআর-এর কাজ চলবে।
এনপিআর-এ বায়োমেট্রিক তথ্য নেওয়া হবে বলে এতদিন শোনা গেলেও কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর মঙ্গলবার নাগরিকদেরকে জানিয়েছেন, এনপিআর এর জন্য কোনও তথ্য ও বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে হবে না।জনগণ যা বলবেন সেটাই নথিভুক্ত করা হবে। আগের মতোই বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন সংশ্লিষ্ট কর্মীরা।
সিএএ-এনআরসি নিয়ে সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন। এর মধ্যে এনপিআর নিয়ে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই মন্ত্রী এ ঘোষণা দিয়েছেন।
ওদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও এদিন মানুষকে স্পষ্ট ধারণা দেওয়ার জন্য বলেছেন, জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জী (এনপিআর) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর (এনআরসি) এর মধ্যে কোনও যোগ নেই। দুটি আলাদা পদ্ধতি। এনআরপি’র জন্য সংগৃহীত তথ্য এনআরসি’র কাজে ব্যবহার করা যায় না।
ভারতজুড়ে এনপিআর এবং জনগণনার জন্য ১৩০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তারমধ্যে জনগণনায় খরচ করা হবে ৮৭৫৪ কোটি টাকা। আর এনপিআরের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৩৯৪১ কোটি টাকা।
কিন্তু সিএএ-এনআরসি নিয়ে বর্তমানে যে উত্তেজনার পরিবেশ বিরাজ করছে তাতে এ পদক্ষেপ নিয়ে আরো বেশি বিতর্ক সৃষ্টি হবে এবং কাজটি সুষ্ঠুভাবে করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। বিরোধীরা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে বিতর্কিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) এর প্রথম ধাপ বলেই মনে করছে।
সিএএ ও এনআরসি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরালায় এনপিআরের কাজ বন্ধ করা হয়েছে আগেই। দুরাজ্যেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কাজ বন্ধ করা হয়।পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত সেই কাজ শুরু করা যাবে না বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল।
ওদিকে, আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর (এনআরসি) মাধ্যমে ইতোমধ্যেই নাগরিকদের চিহ্নিত করার কাজ শেষ হওয়ায় সেখানে আর আলাদা করে এনপিআর-এর কাজ হবে না বলে জানিয়েছে জনগণনা কমিশন।