ভারতজুড়ে ২১ দিনের ‘লকডাউন’ ঘোষণা মোদীর
ভারতে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকার মধ্যে আবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গোটা দেশজুড়ে ৩ সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেছেন তিনি।
ভারতজুড়ে নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫শ’ ছাড়িয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত এ লকডাউন জারি থাকবে।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৮ টার ভাষণে একথা জানিয়েছেন মোদী। এ সময়ে দেশের নাগরিকরা যে যেখানে আছেন সেখানেই থাকার অনুরোধ জানান তিনি।
ভাষণে মোদী বলেছেন, “মধ্যরাত থেকে দেশজুড়ে লকডাউন, ভারতবাসীকে রক্ষা করতেই এ পদক্ষেপ। আপনাদের বাড়ির দরজার বাইরে লক্ষণরেখা টানা হল। মনে রাখবেন, এর বাইরে পা রাখলেই করোনাভাইরাসের মতো মহামারীকে বাড়িতে ডেকে আনবেন।”
“এই কয়েকদিনের জন্য বাইরে বেরোনো ভুলে যান। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নয়, আপনাদের পরিবারের এক জন সদস্য হিসাবে এমন ঘোষণা দিচ্ছি। এটি না করলে দেশ আরও ২১ বছর পিছিয়ে যাবে। ২১ দিনের লকডাউন দীর্ঘ সময়, কিন্তু আপনাদের জীবন আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমার বিশ্বাস প্রত্যেক ভারতবাসী সরকারের নির্দেশ মেনে চলবেন। আশা করি শিগগিরই আমরা এ সঙ্কট কাটিয়ে বেরিয়ে আসতে পারব।”
৫ দিনে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন নরেন্দ্র মোদী। এর আগের ভাষণে ‘জনতা কারফিউ’ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সে কারফিউ জনতা পালন করায় দেশবাসীকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি।
জনতা কারফিউয়ের পরও করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক এবং উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে ভারতের অধিকাংশ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকাতেই লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। এর মধ্যেই মোদী আবার ভাষণ দিলেন।
তিনি এই সঙ্কট কালে দেশের নাগরিকদেরকে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ সেবন করতে নিষেধ করেছেন। সেইসঙ্গে করোনাভাইরাস নিয়ে যে নানারকম গুজব রটছে তার পাশাপাশি কুসংস্কারও এড়িয়ে চলতে বলেছেন। শুধুমাত্র কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
আরো যা যা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী:
· এই সঙ্কটকালে ভারতের সব রাজ্যকেই স্বাস্থ্য পরিষেবাকে প্রাধান্য দিতে হবে।
· ভারতের স্বাস্থ্য পরিষেবা মজবুত করতে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার।
· নাগরিকদের জন্য সব জরুরি পরিষেবা নিশ্চিত করতে সবাই একজোট হয়ে কাজ করছে। সংবাদকর্মীরা সঠিক তথ্য পৌঁছে দিচ্ছে। পুলিশ রাস্তায় নেমে কাজ করছে।
· জীবন বাজি রেখে যারা কাজ করে চলেছেন- সেই ডাক্তার, নার্স, প্যারামেডিক্যাল কর্মী, হাসপাতাল কর্মী, অ্যাম্বুলেন্স চালকদের জন্য প্রার্থনা করুন।
· ভারত এখন এমন পরিস্থিতিতে পাড়ি দিচ্ছে যে, এ সময় সবাইকে সংযম বজায় রাখতে হবে।
· যে সব দেশ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছে তাদের থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
· বিশেষজ্ঞদের কথা তুলে ধরে মোদী বলেছেন, তারা বলছেন, এ বিশ্ব মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়ার একটাই উপায়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।