ভবনের সিঁড়ির নিচে ধ্বংসস্তূপে চাপা ছিল হারুনুরের মরদেহ
রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস গেট এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সিঁড়ির নিচে ধ্বংসস্তূপের কয়েক স্তর নিচে চাপা পড়ে ছিল কেয়ারটেকার হারুনুর রশিদের (৭০) মরদেহ। ভবনের ধসে পড়া দেয়ালের কয়েকটি স্তূপ তুলতেই প্রথমেই হারুনুরের চুলের অস্তিত্ব পান ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
এরপর তারা ভাঙা দেয়ালগুলো তুলতেই দেখতে পায় মরদেহটি।
হারুনুরের হাতের পাশেই পড়ে ছিল তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা সেখানেই খুঁজে পায় তাকে।
উদ্ধারের পর হারুনুর রশিদের মরদেহ দেখে তার মেয়ে হেনা বেগম শনাক্ত করেন। এরপর মরদেহ রমনা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি একটি ভ্যানে করে থানা নিয়ে যাওয়া হয়।
মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অপারেশন্স অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) দেবাশীষ বর্ধন বলেন, সকালে যখন ভুক্তভোগীর মেয়ে আমাদের জানান, তার বাবাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন সন্দেহ হয় ধ্বংসস্তূপের নিচে কোনো মরদেহ থাকতে পারে। সেই থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের পেছনে উদ্ধার তৎপরতা জোরদারভাবে শুরু হয়। ভবনের ধ্বংসস্তূপে তল্লাশি চালাতে কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে কাজ করছিলাম। বিকেল ৩টা ৩৩ মিনিটে ভবনের সিঁড়ির নিচে মরদেহের চুলের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। পরে ধীরে ধীরে ভাঙা দেয়ালে স্তূপ সরিয়ে মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়। আপাতত আর কোনো নিখোঁজের খবর নেই। তারপরও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ডগ স্কোয়াড দিয়ে সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে তল্লাশি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ২৭ জুন বিস্ফোরণের ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজে যোগ দেয়। এখন পর্যন্ত ভবনের পরিত্যক্ত কংক্রিটগুলো অপসারণের কাজ চলছে। বর্তমানে ভবনটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো সময় ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে।
ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সোয়ারেজ লাইনের পাশে একটি পাইপলাইনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে উল্লেখ করে দেবাশীষ বর্ধন বলেন, এটি মিথেন গ্যাসের কোনো লাইন কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, উদ্ধারের পর মরদেহ ফায়ার সার্ভিস আমাদের হস্তান্তর করেছে। এটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।