‘ব্ল্যাকে’ টিকিট কিনতেও আপত্তি নেই!
ক্রীড়া ডেস্ক
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের লড়াই মানেই ক্রিকেট বিশ্বে অন্যরকম উত্তেজনা। ২ জুলাই এজবাস্টনের ম্যাচ নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা তো ভীষণ রোমাঞ্চিত। যেভাবে হোক, কোহলির দলের সঙ্গে মাশরাফি-সাকিবদের খেলা দেখতে তারা মরিয়া। কিন্তু ম্যাচের টিকিট যে অনেক আগেই শেষ! অবশ্য চড়া দামে কেনার সুযোগ আছে ‘কালোবাজারে’। কয়েক গুণ বেশি দামে টিকিট কিনতে আপত্তিও নেই প্রবাসীদের।
এজবাস্টনের দর্শক ধারণ ক্ষমতা প্রায় ২৫ হাজার। বলাই বাহুল্য, ২ জুলাই ম্যাচের বেশিরভাগ টিকিটই ভারতীয়দের দখলে। আইসিসির ওয়েবসাইটে বিক্রি শুরুর ঘোষণার পর তারা রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়ে টিকিট কিনেছেন। বাংলাদেশিরা এক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিলেন অনেক। তারই মাশুল দিতে হচ্ছে এখন। ভারতীয়রা টিকিট বিক্রি করে ভালোই লাভ করছেন। যে সব বাংলাদেশির সামর্থ্য আছে, তারা অনেক বেশি দামে টিকিট কিনছেন নির্দ্বিধায়।
প্রায় ১০ বছর ধরে বার্মিংহামে বাস করছেন শামিম চৌধুরী। এই সফল ব্যবসায়ী বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের টিকিট অনলাইনে দেরিতে বুক করতে গিয়ে ভীষণ বিপদে পড়েছিল পাকিস্তানিরা। ভারতীয়রা আগেই টিকিট কেটে ফেলায় ১৬ জুন ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে পাকিস্তানের খুব বেশি সমর্থক ছিল না। তবে এদিক দিয়ে বাংলাদেশিদের ভাগ্য ভালো। অনেকেই ব্ল্যাকে বেশি দামে টিকিট কিনতে পারছেন। ৫০ থেকে ১০০ পাউন্ড বেশি দিয়ে টিকিট কিনছেন অনেকেই।’ যদিও বাস্তবতা হলো টিকিট বিক্রি হচ্ছে কয়েক গুণ বেশি দামে।
বার্মিংহামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামানও জানালেন একই কথা, ‘পয়সা খরচ করলে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। আমরা আবেগপ্রবণ জাতি, তাই বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ দেখতে অনেকেই দেদার টাকা খরচ করছে, যেভাবে পারছে টিকিট কিনছে। আমাদের একটাই লক্ষ্য, গ্যালারিতে মাশরাফিদের জন্য গলা ফাটানো। আমরা যারা বার্মিংহামে থাকি, তারা ম্যাচটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’
বার্মিংহাম সিটি সেন্টারে কথা হলো ইসমাইল হোসেন নামে একজন ভারতীয়র সঙ্গে। বাংলাদেশি পরিচয় পেয়ে এজবাস্টন ম্যাচ নিয়ে কথা বললেন আগ্রহের সঙ্গে। পেশায় ব্যবসায়ী ইসমাইলের মন্তব্য, ‘বার্মিংহামের বেশিরভাগ ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমী। এজবাস্টনে ভারতের খেলা থাকলে মাঠে ছুটে যান তারা। তোমাদের বিপক্ষে মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি গ্যালারিতেও আমরা এগিয়ে থাকবো।’
তবে বাংলাদেশিরা বসে নেই। জামিল হাসান নামে একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার ৬০ পাউন্ডের টিকিট কিনেছেন ২০০ পাউন্ড দিয়ে। তবু তার আক্ষেপ নেই, মাশরাফি-সাকিবদের ম্যাচ নিয়ে তিনি রোমাঞ্চিত।
বার্মিংহামে প্রবাসীদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। শামিম চৌধুরী জানালেন, ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় জনবহুল এই শহরে প্রবাসীদের মধ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভুতরা সবচেয়ে এগিয়ে। ছাত্র-ছাত্রী ছাড়াও শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী পদে বহু ভারতীয়কে দেখা যায়। কম্পিউটার টেকনোলোজি এবং কর্পোরেট হাউসেও ভারতীয়দের ছড়াছড়ি।
ভারতের পরে প্রবাসীদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছে পাকিস্তানিরা। বাংলাদেশিদের অবস্থান তৃতীয়। শামীম চৌধুরী অবশ্য আশাবাদী, ভবিষ্যতে ভারতীয়দের মতো বাংলাদেশিরাও শক্ত অবস্থান গড়তে পারবে এই শহরে। তিনি বললেন, ‘ভারতীয়রা অনেক আগে বার্মিংহামে এসেছিল। তাই তাদের বর্তমান প্রজন্ম বড় বড় পদে জায়গা করে নিয়েছে। বাংলাদেশিদের পরের প্রজন্ম নিশ্চয়ই সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারবে।’