December 23, 2024
জাতীয়

ব্যর্থ’ আন্দোলনের বদলে আলোচনার পক্ষে মঈন খান

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ‘ব্যর্থ’ আন্দোলনের বদলে আলোচনাকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। তিনি বলেছেন, আমরা ১০ জন লোক গিয়ে পুলিশ-র‌্যাবের গুলিতে রাস্তায় বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসব, সেই ব্যর্থ আন্দোলনে আমি অংশীদার হব না। আমি শক্তি সঞ্চয় করব। একটি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হলে পর্যাপ্ত শক্তি সঞ্চয় করতে হয়; সেই শক্তি আমরা সঞ্চয় করব।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে মঈন খানের এমন বক্তব্য আসে। দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজা নিয়ে গতবছরের ফেব্র“য়ারি থেকে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। মওদুদ আহমদসহ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতা বলে আসছেন, রাজপথের আন্দোলন ছাড়া তাদের নেত্রীর মুক্তির কোনো সম্ভবনা তারা আর দেখছেন না।

তাদের সঙ্গে খানিকটা ভিন্নমত পোষণ করে মঈন খান বলেন, অনেকে বলেছেন, আলোচনা করে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। আমি বলি, আলোচনা করেই মুক্তির পরিবেশ তৈরি করবে হবে।

যারা আন্দোলনের কথা বলছেন, তাদের আগে প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, আন্দোলনের পরিবেশ আমরা সৃষ্টি করব, আন্দোলন হবে এবং দেশনেত্রীকে জেলের তালা ভেঙে আমরা ফিরিয়ে আনব।

গণফোরামের দুই নির্বাচিত এমপি সুলতান মো. মনসুর ও মোকাব্বির খান দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শপথ নেওয়ায় তাদের সমালোচনা করেছেন বিএনপি নেতা মঈন। তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি, আজকে এই ভুয়া সংসদে যাবার জন্য কেউ কেউ অস্থির হয়ে গেছেন, সেখানে গিয়ে নাকি তারা জনগণের কথা বলবেন।

গণফোরামের দুই এমপির উদ্দেশে মঈন বলেন, তারা নিজেরাও জানেন না- কোন জনগণ তাদের ভোট দিয়েছিলে, সেই জনগণ সিল মেরেছিল কি না… বাক্সের ভেতরে কত ভোট ছিল, তার সঙ্গে রেজাল্ট সিটের মিল আছে কি না সেটাও তারা জানেন না।

তারা বুঝতে পারেননি, তারা ফ্লুকে নির্বাচিত হয়েছেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন নাই। ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই সংসদ বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষে কোনো কাজ করতে পারে না। যারা মনে করেন, তারা জনগণ দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, সংসদে গিয়ে জনগণের পক্ষে কথা বলবেন, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।

একাদম সসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “আপনারা দেখেছেন ৩০ ডিসেম্বরের যে নির্বাচন সেই নির্বাচন আগের রাত্রেই সম্পন্ন হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পরে দেশে আরও কয়েকটি নির্বাচন হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচন হয়েছে- সেখানে কী পরিণতি হয়েছে? একই পরিণতি। তারপরে উপজেলা নির্বাচন হয়েছে। সেখানে কী পরিণতি হয়েছে?

আপনারা যেখানে নির্বাচন হয়েছে সেখানে মানুষকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করুন- আজকে নাকি তোমাদের এখানে উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে। মানুষ হা করে তাকিয়ে থাকে- কিসের নির্বাচন? তোমরা ভোট দিতে যাবে না? উত্তর আসে- কিসের ভোট? অর্থাৎ এদেশে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠার জন্য সবচেয়ে বড় যে উপাদান, যার নাম হচ্ছে নির্বাচন, সেই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।

নির্বাচনের নামে ‘খেলা’ হয়েছে মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, এখানে প্রশ্ন উঠেছে, যারা নির্বাচনে জয়লাভ হয়েছে তারা সংসদে কেন যাবে না? উত্তরটা খুব সহজ। এখানে নির্বাচনে তো কেউ জয়ী হয়নি, এখানে তো নির্বাচনে কেউ পরাজিত হয়নি, এখানে খেলা হয়েছে। সেই খেলায় যাকে জয়ী দেখানো হয়েছে সে জয়ী হয়েছে, যাকে পরাজিত দেখানো হয়েছে সে পরাজিত হয়েছে। কাজেই এখানে জয়-পরাজয় তো অর্থহীন।

নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলাম। সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল­াহ,জাতীয়তাবাদী উলামা দলের সাধারণ সম্পাদক শাহ নেছারুল জক, জাসাসের সহসভাপতি শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি ফরিদউদ্দিন আলোচনায় অংশ নেন।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *