‘বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স’ বন্ধ যুক্তরাজ্য-ভারতেও
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
চীন, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরের পর এবার ‘বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স-৮’ মডেলের প্লেন ব্যবহার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য ও ভারত। ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের একই মডেলের প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে ১৫৭ আরোহীর সবাই নিহত হওয়ার জেরে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশ দু’টির সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় ‘বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স-৮’ গ্রাউন্ড করে রাখার ঘোষণা দেয় ভারতের ওয়াচডগ (ডিজিসিএ)।
টুইটার বার্তায় দেশটির সিভিল অ্যাভিয়েশন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ‘বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স-৮’ মডেলের প্লেনগুলোর সব ধরনের চলাচল সাময়িকভাবে বাতিল করছি।
মন্ত্রণালয়ের বার্তায় বলা হয়েছে, সব সময়ের মতোই যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের পরামর্শ নিতে যোগাযোগ করছি।
ভারতের এয়ারলাইন্স স্পাইসজেটের ১৩টি এবং জেট এয়ারওয়েজের পাঁচটি ‘বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স-৮’ মডেলের প্লেন রয়েছে। ডিজিসিএ’র সিদ্ধান্তে তারাও সেগুলো ব্যবহার থেকে বিরত রয়েছে।
এ ব্যাপারে স্পাইসজেটের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আমাদের কাছে সবার আগে যাত্রী এবং ক্রু-দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
এর আগে সোমবার (১১ মার্চ) এ মডেলের প্লেনগুলো পুনরায় ভালোভাবে পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয় সিভিল অ্যাভিয়েশনের ডিরেক্টরেট জেনারেল এবং ডিজিসিএ।
সেসময় তারা বলেছে, এ মডেলের প্লেন চালানোর আগে পাইলটদের কমপক্ষে এক হাজার ঘণ্টা এবং কোন্ডপাইলটদের ৫০০ ঘণ্টা- এটি চালনায় অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
এদিকে, মঙ্গলবার একই মডেলের প্লেন বন্ধের ঘোষণা দেয় যুক্তরাজ্যের সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (সিএএ)।
সিএএ জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশনার আগ পর্যন্ত এ মডেলের প্লেনের চলাচল বন্ধ থাকবে। মূলত এ মডেলের প্লেনের দুর্ঘটনার ব্যাপারে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
ইইউ অ্যাভিয়েশন সেফটি এজেন্সি জানিয়েছে, দুর্ঘটনাটির ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে। শিগগির এর কারণ জানা যাবে।
রোববার (১০ মার্চ) সকালে ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবার বোলে বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট ‘ইটি৩০২’ উড্ডয়ন করার ছয় মিনিটের মধ্যেই ৮টা ৪৪ মিনিটের দিকে বিধ্বস্ত হয়। এতে ফ্লাইটের ১৫৭ আরোহী নিহত হন।
নতুন মডেলের বিধ্বস্ত প্লেনটি মাত্র চার মাস আগে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত হয়। গত বছরের অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ায় বিধ্বস্ত লায়ন এয়ারের প্লেনটিও একই মডেলের ছিল। ওই দুর্ঘটনায় ১৮৯ আরোহীর মৃত্যু হয়।
বিশ্বের বেশ কয়েক দেশ বর্তমানে ‘বোয়িং-৭৩৭ ম্যাক্স-৮’ এর ব্যবহার বন্ধ রেখেছে। তবে অনেক এয়ারলাইন্স তাদের বহরে থাকা মডেলের প্লেনে এখনও আস্থা রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
অন্যদিকে, বোয়িংকে এ মডেলের প্লেনের আরও উন্নয়ন করার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা মডেলটিকে গ্রাউন্ড করবে না বলেও জানিয়েছে।