বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১১ মাস ধরে কমছে
রেমিট্যান্স কমায় ও আমদানি ব্যয় বাড়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। এখন তা কমে গত ২০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে আমদানি ব্যয় আরও বাড়ছে। আগামী কয়েক মাসেও এ ব্যয় বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ মাসেই আরও কয়েকটি বড় দেনা শোধ করতে হবে। এতে রিজার্ভ আরও কমে যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল চার হাজার ১৮৭ কোটি ডলার। ২০২০ সালের নভেম্বরে এর চেয়ে কম চার হাজার ১২৭ কোটি ডলার রিজার্ভ ছিল। নভেম্বরের পর থেকে আর কখনো এত কমেনি। ওই বছরের ডিসেম্বর থেকে রিজার্ভ বেড়েছে। গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত বেড়ে চার হাজার ৮০৬ কোটি ডলারে উঠেছিল। গত বছরের আগস্ট থেকে রিজার্ভ কমছে। টানা ১১ মাস ধরে কমে যাচ্ছে। ওই সময়ে ৬১৯ কোটি ডলার কমেছে। এর আগে ২০২০ সালের অক্টোবরে রিজার্ভ তিন হাজার কোটি ডলারের বৃত্ত পার হয়ে চার হাজার কোটি ডলারের ঘরে প্রবেশ করে। ৪ হাজারের বৃত্ত আর অতিক্রম করতে পারছে না। চার হাজার ৮০৬ কোটি ডলারে উঠে আবার নামতে শুরু করেছে, যা এখনো অব্যাহত আছে।
এদিকে এ মাসের প্রথম ৫ কার্য দিবসের মধ্যে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ ২০০ কোটি ডলারের বেশি শোধ করতে হবে। এ ছাড়া নিয়মিত আমদানির বিল তো রয়েছেই। ফলে রিজার্ভ আরও কমে যেতে পারে।
আকুর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাকিতে পণ্য আমদানি রপ্তানি করে। প্রতি মাস পরপর আকুর দেনা পাওনা সমন্বয় করা হয়। আকুর সদস্য দেশগুলোতে বাংলাদেশ রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি করে। ফলে প্রতি কিস্তিতেই দেনা পরিশোধ করতে হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে রিজার্ভ কমলেও এখনো স্বস্তিদায়ক। রেমিট্যান্স বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিদেশি সংস্থা থেকে কম সুদের ঋণও নেওয়া হচ্ছে। এগুলো পেলে রিজার্ভ আবার বেড়ে যাবে। ফলে রিজার্ভ নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। এদিকে আগামী জুলাই পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক এলসি খোলা আরও বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। মে মাসে ৫৯৭ কোটি ডলার, জুনে ৬১৩ কোটি ডলার এলসি খোলা হয়েছে। জুলাইয়ে ৬১১ কোটি ডলারের এলসি খোলা হতে পারে। এলসি খোলা বাড়লে আমদানিও বাড়বে। তখন রিজার্ভে চাপ আরও বাড়বে।
এদিকে আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে এলসি মার্জিনসহ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এতেও আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এ কারণে বিশেষ করে বিলাসী পণ্য আমদানিতে আরও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে।