বেনাপোল সীমান্ত বন্ধের কথা ভাবছে সরকার
প্রতিবেশী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়েছে। এ কারণে সরকার আবার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত, বিশেষ করে বেনাপোল স্থলবন্দর বন্ধের কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যে হারে ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে বেনাপোল স্থলবন্দর বন্ধ করতে হয় কি না, তা নিয়ে ভাবছি। আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি। পশ্চিমবঙ্গে ওমিক্রনের সংক্রমণ বা বিস্তারে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।’
একে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, ‘আমরা আজও (সোমবার) আলাপ করছিলাম যে, আমাদের সভা করা দরকার। পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে বেনাপোল বর্ডার বন্ধ করতে হয় কি না, তা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। আশা করছি, পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভালো পরামর্শ দিতে পারবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী র্যাবের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিনকেনকে লেখা চিঠির জবাবের অপেক্ষায় আছেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। কোনো কোনো দেশ আমাদের ওপর (বাংলাদেশ সরকার) অসন্তুষ্ট। আমরা তার কারণ খুঁজছি। তাদের অসন্তোষ দূর করার চেষ্টা করছি। আমাদের বেসিক প্রিন্সিপাল—কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব। আমরা এটা মেনেই কাজ করছি। আমরা সেই নিরপেক্ষ পলিসিটা ধরে রাখতে চাই। আমরা সবার সঙ্গে আরও বেশি করে সম্পৃক্ত হতে চাই।’
‘কিছু কিছু দেশ কী কারণে অসন্তুষ্ট, সেটি আমরা রেকটিফাই করার চেষ্টা করব। তারা কোনো মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ক্ষুব্ধ হয়ে থাকলে, আমরা তাদের সত্য তথ্য দিয়ে বোঝাবো। আশা করি, তারা আমাদের ঝুঝবে। কারণ, ওসব দেশের নেতৃত্বের পরিপক্বতা আছে। তারা দায়িত্বশীলও বটে। তাছাড়া, আমরা আমাদের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে তা সংশোধনের চেষ্টা করব।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে বড়দিন ও নিউ ইয়ারের ছুটি শেষে সোমবারই প্রথম অফিস খুলেছে। আমার পাঠানো চিঠি ইতোমধ্যে গন্তব্যে পৌঁছেছে। দেখি, কী জবাব আসে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে পাবলিকলি যা বলেছি, চিঠিতেও তা-ই লিখেছি। আমরা তাদের জবাবের অপেক্ষায় আছি। আশা করি, তাদের জবাবে পজিটিভ কিছু আসবে। আমরা এ নিয়ে আশাবাদী।’
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন মোকাবিলায় বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণায় সোমবার সকাল থেকে বাংলাদেশের বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। ভারতফেরত ১২ বছরের বেশি বয়সী যাত্রীদের র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে।
মেডিক্যাল ও বিজনেস ভিসা (আমদানি রপ্তানি ডকুমেন্ট) ছাড়া কাউকে ভারতে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না সে দেশের ইমিগ্রেশন। গত ৫ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত ৬২ যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। তাকে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।