ইরানের সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ তাদের প্রতিবেদনে জানায়, ৭৮ হাজার আসনবিশিষ্ট আজাদি স্টেডিয়ামে হতে যাওয়া ম্যাচটিতে নারীদের জন্য সাড়ে তিন হাজার টিকেট শুক্রবার সকালে ছাড়া হয়েছিল। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সব বিক্রি হয়ে গেছে।
এর আগে ফিফা রয়টার্সকে জানায় যে, প্রাথমিক ধাপে নারীদের জন্য চার হাজার ৬০০ টিকেট দেওয়া হবে। নারী দর্শকদের চাহিদা পূরণ করতে আরও টিকেট দেওয়া হবে ধারণা করছে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থাটি।
নারীদের মাঠে প্রবেশ তদারকি করতে ফিফা তাদের একজন প্রতিনিধি তেহরানে পাঠাবে বলে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন।
ইরানের মেয়েদের মাঠে গিয়ে খেলা দেখতে দেওয়ার দাবিতে ‘ওপেন স্টেডিয়াম’ নামে চলা একটি ক্যাম্পেইনের কর্মী অভিযোগ করেন, ইরানিয়ান ফুটবল সংস্থার পক্ষ থেকে কোনোরকম ঘোষণা না দিয়েই শুক্রবার সকালে এই টিকেটগুলো অনলাইনে ছাড়া হয়।
১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক অভ্যুত্থানের পর থেকে সেখানে পুরুষদের খেলা দেখতে নারীরা স্টেডিয়ামে যেতে পারেন না। যদিও দেশটির কোনো আইনে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’।
সম্প্রতি খেলা দেখার জন্যে এক নারী পুরুষের বেশে স্টেডিয়ামে ঢুকতে গিয়ে ধরা পড়ে যান এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিচারে ছয় মাসের কারাদণ্ড হতে পারে আশঙ্কায় সাহার খোদায়ারি সেপ্টেম্বরের শুরুতে আদালত প্রাঙ্গনের বাইরে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এক সপ্তাহ পর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
সাহারের এই নির্মম মৃত্যু ইরানের ভেতর ও বাইরে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি করে। সাহারের প্রিয় দল ছিল এসতেকলাল, যাদের জার্সির রঙ নীল। সেই অনুসারে বিশ্বজুড়ে তিনি ‘ব্লু গার্ল’ নামে পরিচিতি পান।
সারা বিশ্বের ফুটবল খেলোয়াড় ও ভক্তরা সাহারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে। এছাড়া ইউরোপের কয়েকটি নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা তার স্মরণে হাতে নীল রঙের ব্যান্ড পরে খেলতে নামেন।
ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফাকেও এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় সমালোচনার মুখে পড়ে। অনেকে ফিফার কাছে ইরানকে ফুটবলে সাময়িক বরখাস্ত বা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়।