বিমানবাহিনীকে উন্নত বিশ্বের পর্যায়ে দেখতে চাই: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে উন্নত বিশ্বের বিমানবাহিনীর সমপর্যায়ে দেখতে চাওয়ায় ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ‘শীত কালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ ২০২১’ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি এই কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “তোমাদের পূর্বসূরিদের দূরদর্শিতা, পেশাদারিত্ব ও কঠোর পরিশ্রমে বিমানবাহিনী আজ যে পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, তাকে তোমাদের মেধা, পেশাদারিত্ব ও দেশপ্রেম দিয়ে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে আমরা উন্নত বিশ্বের বিমানবাহিনীর সমপর্যায়ে দেখতে চাই।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মনে রাখবে যে তোমাদের কর্মক্ষেত্র শুধু বাংলাদেশই না, এখন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও কিন্তু আমাদের বিমানবাহিনীর সদস্যরা বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে। অনেক ক্রিটিকাল জায়গায় যেখানে অন্য কোনো দেশ যেতে সাহস পায় না, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এবং বিমানবাহিনী সেই সব জায়গায়ও গুরুত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। কাজেই আমি মনে করি, ভবিষ্যতের জন্য তোমাদের নিজেদের সেইভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।”
বিমানবাহিনীর নবীন কর্মকর্তাদের সততার পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে দেশ ও জাতির প্রত্যাশা পূরণে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সশস্ত্রবাহিনীর আধুনিকায়ন ও উন্নয়নে জাতির পিতার নেওয়া নানা পদক্ষেপ ও আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া উদ্যোগের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “জাতির পিতাকে হত্যার পর সামরিক শাসকরা ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে তেমন কোনো পদক্ষেপ তারা নেয়নি। কারণ ক্ষমতা দখল আর ক্ষমতা ভোগ করাটাই ছিল তাদের একমাত্র লক্ষ্য।”
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে যাওয়ার পর মিগ-২৯ বিমান কেনার পর মামলার মুখে পড়ার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
“তার পরবর্তী সরকার আমার বিরুদ্ধে মিগ কেন কিনলাম, তার জন্য দুইটা মামলা দেয়। যাই হোক, ওটা আমি পরোয়া করি না। কারণ এই মামলায় তারা কোনো কিছু প্রমাণ করতে পারেনি।”
বিমানবাহিনীর জন্য সুপরিসর সি-১৩০ পরিবহন বিমান এবং উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন আকাশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার কথাও বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান,হেলিকপ্টার,এয়ার ডিফেন্স র্যাডার,ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রয়োজনীয় আধুনিক সরঞ্জামাদি এবং ভুমি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র যাতে প্রেরণ করা যায়, তার ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি। যেটা আগে কখনও ছিল না।”
বিমানবাহিনীর উন্নয়ন এবং বেসামরিক বিমান চলাচল খাতকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার কথাও তিনি বলেন।
“এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার মাধ্যমে আমাদের দেশেই ইনশাল্লাহ একদিন আমরা বিমান, হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমান তৈরি করতে পারব। এই বিশ্বাস আমার আছে।”
আকাশ গবেষণায় গুরুত্ব দিচ্ছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের আকাশসীমার উপর ‘আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ এলাকা’ নির্ধারণের পর ‘এয়ার ডিফেন্স নোটিফিকেশন সেন্টার’ চালু করা হয়েছে, যা দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী।